ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট, ম্যাককুলামের জবাবে বার্নস ও স্মিথ

জোড়া সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার দিন

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

জোড়া সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার দিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিদায়ী টেস্টের প্রথম ইনিংসেই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপিয়ে দিয়েছেন ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। রবিবার ক্রাইস্টচার্চ টেস্টর দ্বিতীয় দিনে যেন সেটিকেও ম্লান করে দিলেন জো বার্নস ও স্টিভেন স্মিথ, এক সেঞ্চুরির জবাবে এলো দুই সেঞ্চুরি। আউট হওয়ার আগে দু-জনে খেললেন ১৭০ ও ১৩৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ৩৭০ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩৬৩। ৬ উইকেট হাতে থাকা স্মিথের দল ৭ রানে পিছিয়ে। ৪ রান নিয়ে ব্যাট করছেন ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা নাথান লেয়ন। ব্যক্তিগত ২ রানে তার সঙ্গী এ্যাডাম ভোজেস। সব মিলিয়ে ১-০তে এগিয়ে থাকা সিরিজের শেষ টেস্টে ভাল অবস্থায় সফরকারীরা। ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ১৮ রান নিয়ে নামা উসমান খাজাকে ২৪ রানের মাথায় ফিরিয়ে দেন ট্রেন্ট বোল্ট, যখন ২৩ ওভারে অতিথিদের রান ৬৭। এরপরই বার্নস-স্মিথের ছন্দময় ব্যাটিং। ২৮৯ রানের কাব্যময় জুটির পথে চা বিরতির ঠিক আগের ওভারে নিল ওয়াগনারের একটা বাউন্সার সরাসরি স্মিথের মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে শুয়ে পড়েন অসি-অধিনায়ক। অন্যপ্রান্তে সঙ্গী বার্নস এবং কিউই ফিল্ডাররা সবাই উদ্বীগ্ন হয়ে ছুটে আসেন। সবার স্মৃতিতে যে অকালপ্রয়াত ফিল হিউজের সেই বিয়োগান্তক ঘটনা। একটু পরেই অবশ্য স্মিথ উঠে দাঁড়ান, বোঝা যায় আঘাত গুরুতর নয়। পরের বলেই চার মেরে জানিয়ে দেন, বাউন্সারটা তাকে একদমই বিচলিত করতে পারেনি। ফেরার আগে শেষপর্যন্ত খেলেছেন ১৩৮ রানের দারুণ এক ইনিংস, রয়েছে ১৭টি চারের মার। ৪১তম টেস্টে স্মিথের এটি ১৪ নম্বর সেঞ্চুরি। চ্যালেঞ্জের জবাবে তার দল অস্ট্রেলিয়াও পায় চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। অধিনায়কের পাশাপাশি দিনটা নিজের করে নিয়েছেন বার্নসও। নবম টেস্টে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও প্রতাপের সঙ্গে বিদেশের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরিটা তুলে নেন ২৬ বছর বয়সী কুইন্সল্যান্ড ওপেনার। ৩২১ বলে ২০ চারের সাহায্যে খেলেন ১৭০ রানের দুরন্ত ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কোন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান এটিই। আগে যেটি ছিল ইয়ান রেডপাথের ১৫৯, (অকল্যান্ডে ১৯৭৩-১৯৭৪-এ)। ব্যক্তিগত ৩৫ রানের মাথায় ম্যাট হেনরির বলে অবশ্য একবার আউটের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। পরে টিভি রিভিউয়ে দেখা যা, বল ব্যাটে নয়, জার্সিতে লেগেছে। শুরুর নড়বড়ে দশা কাটিয়ে এরপর খেলেছেন দারুণ সব শট। অপরাজিত থেকেই শেষ করতে পারতেন। দিনের খেলা যখন সাত ওভারের মতো বাকি তখন ওয়াগনারের বলে মার্টিন গাপটিলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন বার্নস। বার্নস-স্মিথ যোগ করেন ২৮৯ রান, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যা সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। বার্নস-স্মিথের ব্যাটিং-তা-বের দিনে ওয়াগনারই নিউজিল্যান্ডকে কিছুটা আশা দেখিয়েছেন। দু-জনকেই ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কাকতালীয় দুইবারে চিত্রনাট্য আবার একই, ওয়াগনারের বলে গাপটিলের ক্যাচ! তার আগে প্রথম দিনে কিউদের গল্পটা কেবলই ম্যাককুলামের। জীবনের শেষ ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নতুন ইতিহাস গড়েছেন। ২১ চার ও ৬ ছক্কায় খেলেছেন ১৪৫ রানের ‘টর্নেডো’ ইনিংস। দ্রুততম সেঞ্চুরিরর রেকর্ডের পথে বল খেলেন মাত্র ৫৪টি! যে রেকর্ড এতদিন যৌথভাবে ছিল ভিভ রিচার্ডস ও মিসবাহ-উল হকের দখলে। দু-জনেই খেলেছিলেন ৫৬ বল। ম্যাককুলাম চালান ৭৮ মিনিটের এক ‘মহাতা-ব’, সময়ের হিসেবে যা তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির নজির।
×