ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সবার আগে বিদায় চিটাগাংয়ের

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

সবার আগে বিদায় চিটাগাংয়ের

মিথুন আশরাফ ॥ রান খুব বেশি হয়নি। ১২১ রান করেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। এ রানই করতে পারেনি চিটাগাং ভাইকিংস। হেরে গেছে ৪৫ রানে। এ হারে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) তৃতীয় আসর থেকে সবার আগে বিদায় নিয়েছে তামিম ইকবালের চিটাগাং। ম্যাচটিতে জয় পেয়ে শেষ চারে ওঠার আশা ভালভাবেই বাঁচিয়ে রাখল ঢাকা। টস জিতে চিটাগাং। আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকাকে চাপেও রাখে। অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা ৩৮ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২৪ রান না করলে আরও কম রানে অলআউট হতে পারত ঢাকা। ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভার খেলে ১২১ রান করতে পারে ঢাকা। ৩ উইকেট করে নেয়া মোহাম্মদ আমির ও শফিউল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঢাকাকে অল্পতেই বেঁধে রাখতে পারে চিটাগাং। এ রান অতিক্রম করতে গিয়ে অবাকই করেছেন চিটাগাংয়ের ব্যাটসম্যানরা! টপাটপ উইকেট পড়তে থাকে। ৪ উইকেট নেয়া মোশাররফ হোসেন রুবেলের স্পিন ভেল্কিতে ১৬.৫ ওভারে ৭৬ রানে গিয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে বসে চিটাগাং। ফিল্ডিংয়ের সময় জিয়াউর রহমান ইনজুরিতে পড়েন। আর তাই ব্যাট করতে নামতে পারেননি। ৯ উইকেট শেষ হতেই তাই চিটাগাং অলআউটও হয়ে যায়। টুর্নামেন্টের লীগ পর্বের খেলা শেষ হতে আরও ২ দিন বাকি আছে। এর আগেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্স ও বরিশাল বুলস শেষ চারে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে। এ তিন দল এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ওঠার জন্যই খেলতে থাকবে। শেষ চারে ওঠা বাকি রয়েছে আরেকটি দলের। ৬ দলের টুর্নামেন্টে নিয়ম অনুযায়ী ২ দল বাদ পড়বে। চারটি দল শেষ চারে খেলবে। সেই দুটি দল হবে কারা, কোন দল উঠবে শেষ চারে? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খেয়েছে। বাদ পড়া একটি দল মিলে গেছে। সেটি ৯ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পাওয়া চিটাগাং। আরেকটি ম্যাচ বাকি আছে চিটাগাংয়ের। যদি দলটি জিতে, তাহলে সর্বসাকুলে ৬ পয়েন্ট হবে। এরইমধ্যে পয়েন্ট তালিকায় উপরের সারির (কুমিল্লা, রংপুর, বরিশাল ও ঢাকা) চার দলের ৮ পয়েন্ট বা তার বেশি আছে। তাই চিটাগাংয়ের শেষ চারে খেলার আর কোন সুযোগই থাকল না। এখন ঢাকা ডানামাইটস ও সিলেট সুপার স্টারসের মধ্যকার দুর্দান্ত লড়াই হবে। এ দুই দলের মধ্যকার যে কোন একটি দল উঠবে শেষ চারে। ৮ ম্যাচে সিলেটের যেখানে ৪ পয়েন্ট, ঢাকার সেখানে চিটাগাংকে হারিয়ে ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট যুক্ত হয়ে গেছে। সিলেটের চেয়েও দ্বিগুণ পয়েন্ট যুক্ত আছে ঢাকার। এরপরও এখনও শতভাগ নিশ্চিত হতে পারেনি ঢাকা। কারণ, ঢাকা যদি বাকি থাকা ২ ম্যাচ হারে, আর সিলেট যদি বাকি থাকা ২ ম্যাচ জিতে; দুই দলেরই ৮ পয়েন্ট করে হবে। তখন রানরেটেই ঢাকা না সিলেট চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চারে খেলবে তা নিশ্চিত হবে। তবে আজ যে সিলেট-ঢাকা ম্যাচ রয়েছে, এ ম্যাচে ঢাকা জিতলেই শেষ চারে খেলার টিকেট পেয়ে যাবে। তখন সিলেটও বাদ পড়ে যাবে। ঢাকা অবশ্য ব্যাট হাতে শুরুতেই অবাক করেছে। ইয়াসির শাহকে নামিয়ে দিয়েছে। ইয়াসিরও ১০ রান করেন। ১৩ রানে ইয়াসির আউট হতেই ১৪ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বসে ঢাকা। এরমধ্যে মোহাম্মদ হাফিজও আউট হন। কার বলে? পাকিস্তান পেসার মোহাম্মদ আমিরের বলে। বিপিএলে যার উপস্থিতির জন্য একটা সময় টুর্নামেন্টই খেলতে চাননি হাফিজ। অবশেষে ঢাকার হয়ে খেলছেন। তবে প্রথম ম্যাচেই চিটাগাংয়ের আমিরের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাতে আমিরের বলে আউট হয়ে হার মানলেন যেন হাফিজ। দলের বেহাল দশা হয়ে যায়। সেখান থেকে সাঙ্গাকারা ও সৈকত দলকে অনেকটা দূর নিয়ে যান। দুইজন মিলে দলকে পঞ্চম উইকেটে ৫৬ রান উপহার দেন। যেই দল ৯১ রানে যায় এমন সময়ে টানা দুই বলে সাঙ্গাকারা ও সৈকতকে আউট করে দেন শফিউল। ঢাকার রানের চাকা যাও একটু সচল হয়, আবার তা অচল হয়ে যায়। মনে করা হচ্ছিল, চিটাগাং আজ জিতবে। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা কী দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন! অবাক করলেন সবাইকে। ১৩ রানে তিলকারতেœ দিলশান (৪) আউটের পর ২০ রানে তামিম (৮) যে এলবিডব্লিউ হলেন, সেখানেই মূলত খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলে। ইনজুরি থেকে দ্রুতই সেরে ওঠে ম্যাচটি অবশেষে খেললেন তামিম। তবে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে তামিমের এলবিডব্লিউ নিয়ে যথেষ্ট আলোচনা-সমালোচনা হতে পারে। এতটা পা এগিয়ে রাখার পরও তামিমকে এলবিডব্লিউ আউট দেয়া হলো! এরপর যেন মুড়ি মুড়কির মতো আউট হতে থাকলেন চিটাগাংয়ের ব্যাটসম্যানরা। দলের ৩৩ রানের সময় ৬ রানে থাকা এনামুল হক বিজয় ক্যাচ আউট হওয়া থেকে বাঁচেন। এরপরও ৯ রানে বেশি করতে পারেননি। দলীয় সর্বোচ্চ রানই যেখানে ১৪। তা করেছেন উমর আকমল। সেখানে ব্যাটসম্যানদের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠতে বাধ্যই। এ বেহাল দশা চিটাগাংকে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে দিল। সবার আগে বিদায় নিতে হলো চিটাগাংকে।
×