ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘স্মার্ট বাংলাদেশে’র পথে

ড. আতিউর রহমান

প্রকাশিত: ০১:১২, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

‘স্মার্ট বাংলাদেশে’র পথে

একটি দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় বেশি বেশি আশা করার মনোভাবই সবচেয়ে বড় সম্পদ

একটি দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় বেশি বেশি আশা করার মনোভাবই সবচেয়ে বড় সম্পদ। স্বপ্ন থাকলেই তো তার সমান হওয়ার আশা থাকে জাতির মনে। বাংলাদেশ সেই বিচারে বড়ই ভাগ্যবান। শত সংকট সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বপ্নের পরম্পরায় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তর তর করে। গেল বছরের শেষ মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সামনে এনেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশে^র উন্নত দেশগুলোর কাতারে নিয়ে যাওয়ার নতুন স্বপ্নীল পথনকশা।

২০০৮-এ ক্ষমতা গ্রহণের পর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে স্বপ্ন তিনি দেখিয়েছিলেন, পরের ১৩-১৪ বছরে তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার পর এটি তাঁর পরবর্তী আশা জাগানিয়া কর্মসূচি হতে যাচ্ছে। তবে করোনাজনিত অর্থনৈতিক স্থবিরতার কাল শেষ হতে না হতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশি^ক অর্থনীতির সংকটের প্রভাবে বাংলাদেশও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। বিশেষ করে সার ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং আমদানিজনিত মুদ্রস্ফীতি থেকে কম আয়ের পরিবারগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিদ্যমান।

এ অবস্থায় ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’র মতো উচ্চাভিলাষী অভিযাত্রার শুরুটা কতোটা কার্যকর হতে পারে- সে প্রশ্ন আসতেই পারে। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, ২০০৮-এ যখন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’র অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে, তখনও এ শতাব্দীর প্রথম বৈশি^ক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপের মুখেই ছিল। কৃষি উৎপাদন, রপ্তানি, ও রেমিটেন্স প্রবাহকে বেগবান করার কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে, এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় প্রসারিত ও সুসংহত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথরেখা ধরে দেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

এই নীতিকৌশলের মূল জায়গায় ছিল সর্বোব্যাপী ডিজিটাইজেশন। এই ডিজিটাইজেশন কৌশলের সফলতার সবচেয়ে বড় নজির সে সময় স্থাপন করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে দেশের আর্থিক সেবা খাত। এর ফলে প্রকৃত অর্থনীতিতে অর্থায়ন সম্ভব হয়েছিল এবং একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাকেও দ্রুত বলশালী করা সম্ভব হয়েছিল। ফলে ২০০৮-০৯-এর বৈশি^ক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি যেমন বেগবান করা গিয়েছিল, তেমনি মানুষের জীবন মানের উন্নতিও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছিল।

আর সেই ডিজিটাল অর্থায়নই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে কোভিড-১৯ সংকটকালে চাঙ্গা রেখেছিল নিরন্তর। ঘরে বসেই ব্যাংকিং এবং মোবাইল আর্থিক সেবা সচল রাখা গেছে ওই সময়। ফলে কখনই আমাদের অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়েনি। তাই ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও কোভিড-উত্তর বাংলাদেশের  অর্থনীতি রয়ে গেছে সপ্রতিভ।  
আত্মশক্তির জোরে বাধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই সংস্কৃতি বাঙালির মনে প্রোথিত করে গিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ একটি ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হতে যাচ্ছিল বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘দাবায় রাখতে পারবা না’। যেমন কথা তেমন কাজ। বিদেশী সহায়তার মুখাপেক্ষি না থেকে কৃষি ও শিল্পের ভারসাম্য পূর্ণবিকাশে মনোযোগ দিয়েছিলেন তিনি। আর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দেওয়ার দিকে।

তাই নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৯৩ ডলার থেকে ২৭৩ ডলারে উন্নিত করতে পেরেছিলেন। কাজেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বড় স্বপ্ন বাস্তবায়নের যে পরম্পরা আমাদের আছে তার ওপর ভরসা করেই বলা যায় চলমান সংকট মোকাবিলা করে আমরা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ও বাস্তবায়ন করতে পারব।
কেমন হবে স্মার্ট বাংলাদেশ? এক্ষেত্রে বাংলাদেশের তুলনা চলে ১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকের সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে। ওই সময়ে এ দেশগুলোর মাথাপিছু আয় ২,৪০০ ডলারে পৌঁছার পর আয় বৃদ্ধির হার দ্রুত বেড়ে যায় এবং অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের মাথাপিছু আয় ৪,০০০ ডলারে গিয়ে ঠেকে। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২,৮০০ ডলারের বেশি। বিশ^ব্যাংক ও বিবিএস-এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশীদের পথ ধরে এগুলে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২০২৬-এর মধ্যেই ৪,০০০ ডলার ছাড়াতে পারে।

আর এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখবে আমাদের নিজস্ব ভোগ। এখনই আমাদের প্রবৃদ্ধির ৭৩ শতাংশের মতো আসে এই নিজস্ব ভোগ থেকে। ২০২৬-এর মধ্যে জিডিপিতে ভোগের অবদান আরও ১২ শতাংশ বাড়তে পারে। এইচএসবিসি গ্লোবাল রিসার্চ অক্টোবর ২০২২-এর এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে যে এই নিজস্ব ভোগের জোরে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ইউকে এবং জার্মানির মতো দেশগুলোকে টপকে বিশে^র নবম বৃহত্তম কনজ্যুমার মার্কেট হতে যাচ্ছে। ফলে এই সম্ভাবনাময় বাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা খুব চ্যালেঞ্জিং হওয়ার কথা নয়।

ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে অনেক বিনিয়োগকারিই চীন থেকে সরে আসছেন। তাদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে আসবেন এমন প্রত্যাশা মোটেই অমূলক হবে না। আর গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে অর্থনীতির ডিজিটাইজেশন এবং বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পের কল্যাণে বিনিয়োগ পরিবেশও যথেষ্ট উন্নত করা গেছে। পদ্মা সেতু, কালনা সেতুসহ দেশব্যাপী গড়ে তোলা ছোট-বড় সেতুর নেটওয়ার্ক, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল, ঢাকায় মেট্রোরেল, পাতালরেল, মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর ইত্যাদি বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পের সুফল সরাসরি ভোগ করবেন দেশের ৩৩ শতাংশ নাগরিক। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে। বন্দরের সক্ষমতা ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় পণ্য ওঠানামার সময় কমে আসবে অর্ধেকে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়বে ৫৭ শতাংশ, আর তাতে যুক্ত হবে আরও ১২ গিগাওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ। মেগাপ্রকল্পগুলোর একেকটির কল্যাণে জিডিপিতে যুক্ত হতে পারে প্রায় ১.২ শতাংশ করে। তবে এসব বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য যে মৌলিক উপকরণ লাগবে তা সংগ্রহের চ্যালেঞ্জ থেকেই যাবে। আর সে কারণেই আমাদের দিনের শেষে প্রচলিত ও ‘রিনিউয়েবল’ জ্বালানির সংমিশ্রিত কৌশল গ্রহণ করতেই হবে। কেননা আমাদের দেশে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। 
বিনিয়োগের এমন সম্ভাবনার কারণে দেশের বিশেষ রপ্তানি অঞ্চলগুলো সারা বিশ^ থেকেই বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে। এতে কেবল আমাদের রপ্তানি আয় বাড়বে তাই নয়, পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বাড়বে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির কারণে ১১ শতাংশ নাগরিক দারিদ্র্য থেকে উঠে আসবেন। এদের বড় অংশই তরুণ। আয় বৃদ্ধির ফলে তাদের পক্ষে উচ্চশিক্ষা (বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষা) গ্রহণের সুযোগ যদি বাড়ানো সম্ভব হয় তাহলে উচ্চতর প্রায়োগিক ডিগ্রি থাকার কারণে তাদের পক্ষে আরও বেশি আয় করা সম্ভব হবে।

ফলে একটি ইতিবাচক চাক্রিক প্রভাব আমরা পুরো সামষ্টিক অর্থনীতিতে দেখতে পাবে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের হিসাব দেখাচ্ছে যে, এভাবে এগুতো পারলে ২০৪০ সালের মধ্যে আমাদের অর্থনীতির আকার হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার (বর্তমানে ০.৪২ ট্রিলিয়ন ডলার)। তাদের মতে চীন ও ভারতের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়া বাংলাদেশের পক্ষে খুবই সম্ভব।

সরকার ইতোমধ্যেই ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য যে ‘এনাবলিং এনভায়রনমেন্ট’ প্রস্তুত করেছে তা কাজে লাগিয়ে এই অভিযাত্রায় নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশের ‘ইমার্জিং’ ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তারা। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের জরিপ বলছে ইমার্জিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬১ শতাংশই আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের দখল নিশ্চিত করতে এবং নিজেদেরকে ‘গ্লোবাল ব্র্যান্ড’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সুনির্দিষ্ট কৌশল নিয়ে এগুচ্ছে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামনের চিত্রটি আশাব্যঞ্জক এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। একই সঙ্গে আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে সেগুলোও মাথায় রাখতে হবে। আর্থিক খাতে সুশাসনের চ্যালেঞ্জটি এ মুহূর্তে সবচেয়ে প্রকট হয়ে সামনে আসছে। এক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও তদারকি নিশ্চিত করতে না পারলে চলমান বৈশি^ক সংকট মোকাবিলা করা একেবারেই অসম্ভব। পাশাপাশি রাজস্ব আহরণ বাড়ানোও আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

বর্ধিষ্ণু অর্থনীতি পরিচালনা করতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ কথা মানতেই হবে যে, আমাদের জিডিপি যেভাবে বেড়েছে সেভাবে আমরা কর আহরণ করতে পারিনি। তাই কর-জিডিপি অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই বলে আসছি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতার বিচারে এই অনুপাত অন্তত ১৫ শতাংশ হওয়া চাই। তবে এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, কর আয় বাড়ানোর জন্য জোরাজুরির পথে না হেঁটে নাগরিকদের তাদের দায়িত্ব পালনের জায়গা থেকে কর প্রদানে উৎসাহিত করতে হবে।

একই সঙ্গে কর আহরণ প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সহজীকরণের দিকেও নীতি-মনোযোগ বাড়ানো দরকার। সর্বোপরি রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিগত দিনগুলোতে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে তা বৈশি^ক নীতি-নির্ধারকদের কাছে স্বীকৃতি পাচ্ছে অনুস্মরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে। তাই সর্বশেষ আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তার মধ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে ‘রেজিলিয়েন্স এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ট্রাস্ট ফান্ড’-এর জন্য।

তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি হিসেবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরও অনেক মনোযোগী হওয়ার দরকার রয়েছে। বিশেষত সবুজ জ্বালানির প্রসারে আমাদের পক্ষে যতোটা করা সম্ভব ছিল তা আমরা করে উঠতে পারিনি- এ কথা মানতেই হবে। 
আমাদের সামনে থাকা এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার পথও জানা আছে। ১২ ডিসেম্বর ২০২২-এ প্রধানমন্ত্রী যখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’র আশা জাগানিয়া পথনকশা তুলে ধরেছেন, তখনই তিনি এই স্বপ্নের প্রধান চারটি স্তম্ভগুলোও চিহ্নিত করে দিয়েছেন। এগুলো হলো- ০১) স্মার্ট সিটিজেন, ০২) স্মার্ট অর্থনীতি, ০৩) স্মার্ট গভর্নমেন্ট, এবং ০৪) স্মার্ট সমাজ।

এই চারটি স্তম্ভকে মজবুত করতে পারলেই টেকসইভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। স্মার্ট সিটিজেন তথা নাগরিক গড়ে তুলতে মানুষের ওপর বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কেননা স্মার্ট জনশক্তি ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া মোটেও সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও সামাজিক সুরক্ষায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনসম্পদ গড়ে তোলাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

অর্থনীতিকে স্মার্ট করে তুলতে ডিজিটাইজেশনকে রাখতে হবে কেন্দ্রীয় বিবেচনায়। রপ্তানি বহুমুখীকরণের পাশাপাশি নতুন নতুন রপ্তানির বাজার ধরতে হবে। সর্বোপরি নিজেদের বৈশি^ক সরবরাহ চেইনে আরও বেশি করে ‘ইন্টিগ্রেটেড’ করতে হবে। তৃতীয়ত, সরকারকে আরও স্মার্ট করে তুলতে নাগরিকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করতে হবে। তদারকির প্রক্রিয়ার ব্যয় যতটা সম্ভব কমাতে হবে। এক্ষেত্রেও ডিজিটাইজেশনই হবে মূল অস্ত্র।

আর পুরো সমাজকে স্মার্ট করতে সামাজিক দায়বদ্ধ ব্যক্তি খাত ও বেসরকারি খাতের বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল অংশীজনের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সুসমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। পুরো সমাজের সকল অংশীজনের আন্তরিক অংশগ্রহণের মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। 

লেখক : অর্থনীতিবিদ এবং 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর

×