ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী

শুধু রাজা বা রাণী বদল হলেই চলে না, কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন

প্রকাশিত: ১৮:০০, ১৩ জুন ২০২৫

শুধু রাজা বা রাণী বদল হলেই চলে না, কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন

ছ‌বি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেছেন, শুধু নেতৃত্ব বদলালে হবে না, দেশের কাঠামোগত পরিবর্তন না হলে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তিনি জানান, জনগণের আকাঙ্ক্ষা ছিল জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের বিচার, সেইসঙ্গে একটি নতুন সংবিধান ও রাজনৈতিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠন।

তিনি বলেন, ৯০ সালের গণআন্দোলনের পর যেভাবে একটি সামাজিক চুক্তি হয়েছিল, পরবর্তীতে তা বাস্তবায়িত না হয়ে পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া হয়েছিল। এবার সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি চলতে দেওয়া যাবে না। বর্তমানে বিদেশের মাটিতে বসে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বৈঠক হচ্ছে, যা শহীদের রক্ত এবং দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবমাননা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী আরও বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে পাশ কাটিয়ে একটি নির্দিষ্ট দলের ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার পরিচালিত হচ্ছে। এতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হচ্ছে না, বরং একটি পুরনো ব্যবস্থার দিকেই দেশকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশের সিদ্ধান্ত দেশের মাটিতেই হতে হবে। শহীদের রক্তের মূল্য দিতে হলে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি আনতে হবে। এনসিপির ঘোষণাপত্রে থাকা সংস্কার, বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে বাংলাদেশ আবার একটি নতুন গণঅভ্যুত্থানের মুখোমুখি হবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার এখন বিএনপির সাথে একজোট হয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার নামে ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপিও প্রথমে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করলেও এখন রোজার আগেই নির্বাচন হতে পারে বলছে, কিন্তু তারা বিচার ও সংস্কারের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও প্রস্তাবনা দেয়নি।

নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, "একটি গণঅভ্যুত্থান শুধু একটি সরকারের পতনের জন্য নয়, একটি কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য হয়। আমরা শুধু রাজার পরিবর্তে নতুন রাজা বা রানী চাই না, আমরা চাই নতুন কাঠামো।"

তিনি আরও বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এখনও সরকারের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। এভাবে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি বলেন, “আমরা বারবার বলেছি বিচার ও সংস্কার ছাড়া কেবল একটি নির্বাচন আয়োজন করে জনগণকে ভুল পথে নেওয়া যাবে না। যদি জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এনসিপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে। জনগণ প্রস্তুত রয়েছে এবং ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরও তীব্র লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”

তিনি সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, শহীদদের পরিবারের চোখের পানি, আহতদের যন্ত্রণা, এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা মূল্যায়ন করতে হবে। এটাই দেশের মুক্তির পথ। শুধুমাত্র নির্বাচন আয়োজন করে তা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, সরকার যদি জনগণের সঙ্গে আলোচনা না করে, শুধু বিদেশে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমরা কাঠামোগত পরিবর্তন ছাড়া কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না। জনগণই আমাদের শক্তি, জনগণের মুক্তির লড়াই চলবেই।

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/live/WiuewOtOVtc?si=F5UIfdDpu7_ZdJ36

এম.কে.

×