
ছবি: সংগৃহীত
এনসিপি মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের উদ্যোগে ১৬ মে শুক্রবার ২০২৫ কুয়ালামাপুরের একটি হোটেলে নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মূখ্য সংগঠক এডভোকেট আলী নাছের খান। সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ডায়াস্পোরা এলায়েন্সের মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো: এনামুল হক। উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের নির্বাহী সদস্যবৃন্দ।
আলোচনা সভাটি মূলত একটি কর্মশালার মতো করে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী সদস্যগণ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এনসিপির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা জানতে চান এবং নেতারা বিষয়গুলো স্পষ্ট করেন। আলোচনার প্রথম পর্বে এনসিপির ৫ টি শক্তিশালী ভিত্তির উপর আলোচনা করেন আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। এগুলো হলো- ১) ২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান যেটি এনসিপি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি গণঅভ্যুত্থানকে এনসিপির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করেন। ২) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি- বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো যখন বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের জাল ভেদ করতে পারেনি তখন এনসিপির আজকের তরুণ নেতৃত্বই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জীবন বাজি রেখে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। তাই পরিপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি স্বোচ্চার থাকবে। ৩) আগ্রাসনবিরোধী অবস্থান- এনসিপির জন্মের পূর্ব থেকেই তার নেতারা গণবিরোধী ও বহি:রাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী অবস্থান নিয়ে এখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ভিত রচনা করেছে। এনসিপি আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশের জনগণের সম্মতির বাইরে কোন দেশের বা বহি:রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের মাধ্যমে তার রাজনীতি চালিয়ে যাবে। ৪) বিভাজনের রাজনীতির বদলে জাতীয় ঐক্য- এনসিপি অতীতে জাতীয়তাবাদের নামে, পরিচয়ের নামে, ধর্মের নামে, আদর্শের নামে জাতিকে বিভক্ত রাখার রাজনীতিকে খারিজ করে বিরল ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেই স্বৈরতন্ত্রের উৎখাত করেছিল। আগামী দিনগুলোতেও বৈচিত্র্যের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই এনসিপি বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। ৫) প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল- এনসিপি গণঅভ্যুত্থানকারী প্রজন্মের প্রতিনিধি যারা যেকোন মূল্যে এই প্রজন্মের মূল্যবোধ ও আশা আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ তৈরি করতে চায়। আজকের তরুণ আগামী দিন জাতির হাল ধরবে। তাই তরুণদের রাষ্ট্রগঠনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গঠনই এনসিপির আগামীর রাষ্ট্রকল্প।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এডভোকেট আলী নাছের খান এনসিপির আগামীর কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ১) নাগরিক অধিকারভিত্তিক রাজনীতি- যেমন নাগরিকদের প্রাইভেসি, মতামত নেয়ার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ, নাগরিক অধিকার, সেল্ফ রেস্পেক্ট সহ ইত্যাদি নাগরিক অধিকারভিত্তিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া। ২) প্রতিটি নাগরিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা। ৩) বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মূলধারায় যুক্ত করার জন্য কাজ করে যাওয়া। উক্ত আলোচনা সভায় প্রবাসীগণ মালয়েশিয়ায় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পাসপোর্ট সেবা, এটেস্টেশন ফি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ প্রবাসীদের কল্যাণ সাধনে এনসিপির অবস্থান ও পরিকল্পনা জানতে চান। অনুষ্ঠানে পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীগণ অংশগ্রহণ করেন।
আসিফ