ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

এ দেশ ঐতিহ্যের লীলাভূমি

মো. হারুন মিয়া

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ দেশ ঐতিহ্যের লীলাভূমি

ভ্রমণ মানুষকে আনন্দ দেয়

ভ্রমণ মানুষকে আনন্দ দেয়। আর মানুষ আনন্দ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মেশার জন্যই ভ্রমণ পছন্দ করে। একজন মানুষ যত ভ্রমণ করে তত তার জ্ঞান অর্জন হয়, জানতে  পারে দেশ-বিদেশের নানান ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কিন্তু আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষের ভ্রমণের পরিচিত স্পট কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, সাজেক, সিলেট, এবং এসব স্থানগুলোতেই পর্যটকের আগমন ঘটে বেশি। ভ্রমণ করার পাশাপাশি যদি কোনো জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানা যায় সেই ভ্রমণ হয় অভিজ্ঞতার।

ময়মনসিংহ শহরে আছে শশীলজ, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী পার্ক, জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, ময়মনসিংহ শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত গৌরীপুর উপজেলা যেখানে আছে রাজা জমিদারদের স্মৃতিবিজড়িত ইতিহাস। ১৯৪৭ সালের দিকে গৌরীপুরে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তি হয়। এরপরে সব জমিদার ও রাজারা দেশভাগের সময় এই দেশ ত্যাগ করেন। (১) গৌরীপুর সরকারি কলেজ। ১৯৬৪ সালে গৌরীপুর পৌর শহরের কৃষ্ণপুর এলাকায় জমিদার সুরেন্দ্র্র প্রসাদ লাহিড়ীর বাড়িতে এই বিদ্যাপীঠের যাত্রা শুরু হয়। 
(২) গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি হাই স্কুল (আরকে) স্যাকে সংক্ষেপ আরকে স্কুল বলা হয়। এই বিদ্যাপীঠটিও একটি প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টির সামনে আছে একটি দৃষ্টিনন্দন পুকুর যাকে অনন্ত সাগর নামে ডাকা হয়। পাশাপাশি রয়েছে গৌরীপুর রাজবাড়ী (৩) গৌরীপুর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি। তবে অনান্য ভবন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্মৃতি হিসেবে এখানে আছে সিংহ গেটটি। ভাঙাচোরা অবস্থায়। (৪) বীরত্ব আর প্রেমের অমর আখ্যান নিয়ে এই উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের কুমড়ী গ্রামে শায়িত হয়েছেন বীরাঙ্গনা সখিনা।

যে গ্রামটি মানুষ কেল্লা তাজপুর বলেও চিনে। বাবার সৈন্যের বিরুদ্ধে পুরুষ বেশে যুদ্ধ করেছেন স্বামীর পক্ষ হয়ে। এই নারী ছিলেন নানানগুণের ও অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী। স্বামীর পক্ষ নিয়ে বাবার সৈন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিহত হন এই নারী।  ফিরোজ খাঁর সঙ্গে সখিনার প্রেমের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তার বাবা উমর খাঁ যে কারণে তার মেয়ের জামাই ফিরোজ খাঁ- কে বিভিন্ন কৌশলে আক্রমণ করতো।

পরবর্তী সময় বীরাঙ্গনা সখিনা যুদ্ধে নিহত হলে পাগলপ্রায় তার জামাতা ফিরোজ খাঁর শ্বশুর উমর খাঁ থাকে বন্দিশালা থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও জমিদারদের কয়েকটি স্থাপনা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায়  রয়েছে। ভ্রমণপিপাসুরা এখানে গেলে জমিদার বাড়ি দেখার পাশাপাশি ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী নামকরা খাবার মুক্তাগাছার ম-ার স্বাদও নিতে পারেন। ময়মনসিংহ শহর থেকে মুক্তগাছার দূরত্ব ১৮ কিলোমিটারের মতো। সব মিলিয়ে আশা করি, ভ্রমণ পিপাসুরা এই দর্শনীয় স্থানগুলো দেখলে ঘোরাঘুরি করার পাশাপাশি রাজা-জমিদারদের ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কেও জানা হয়ে যাবে। 

গৌরীপুর, ময়মনসিংহ থেকে

×