ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এত বিপুল ভুয়া তথ্য ছড়ায় যে এর বিরুদ্ধে লড়তে অন্তত ২০০ জনের একটি টিম প্রয়োজন :প্রেস সচিব

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৯:৪৫, ৫ জুন ২০২৫

এত বিপুল ভুয়া তথ্য ছড়ায় যে এর বিরুদ্ধে লড়তে অন্তত ২০০ জনের একটি টিম প্রয়োজন :প্রেস সচিব

ছবি:সংগৃহীত

প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার অন্যতম গুরুতর সংকট, ভুয়া খবর এবং তথ্য বিকৃতি, নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দেশের নামকরা পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো প্রায়ই ভুল সংবাদ প্রচার করে থাকে, অথচ এসব ভুল শুধরাতে তারা অনীহা দেখায়। সংশোধনী না দিয়ে কেবল চুপচাপ প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।

 

 

 

একটি সাম্প্রতিক উদাহরণ টেনে শফিকুল আলম বলেন,

“শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতার চার বীর সেনানীর মুক্তিযোদ্ধা মর্যাদা নিয়ে ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ে। সরকারিভাবে বারবার ব্যাখ্যা দেওয়ার পরও অনেক সংবাদমাধ্যম তা সরাতে দেরি করে, কেউ কেউ দুঃখপ্রকাশই করেনি।”

এই বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন ভারতের গণমাধ্যমসহ লাখো মানুষের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘পুনর্লিখনবাদী’ (revisionist) এজেন্ডা চালানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ উস্কে দেয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

একই রাতে একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম “মানবিক করিডোর” নিয়ে জাতিসংঘের কূটনীতিকের বক্তব্য ভুল অনুবাদ করে। এতে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, রাজনীতিবিদরাও সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন।

“সংবাদমাধ্যমটি চুপচাপ ভুলটা সরিয়ে নেয়, কিন্তু শুরুতে কোনও সংশোধনী বা ব্যাখ্যাই দেয়নি,” বলেন শফিকুল।
“আমি রাত ১২টার পর DW বাংলা-কে নিজে ফোন করে অনুরোধ করি যেন তারা সংশোধন করে।”

 

 

ভুয়া খবর প্রতিরোধ এখন তার দায়িত্বের একটি বড় অংশ জানিয়ে তিনি বলেন, “এত বিপুল ভুয়া তথ্য ছড়ায় যে এর বিরুদ্ধে লড়তে অন্তত ২০০ জনের একটি টিম প্রয়োজন।”

 

তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা গণহত্যা-সহ বিভিন্ন মানবিক সংকটে ভুয়া তথ্য বড় ভূমিকা রেখেছে। এমনকি ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পেছনেও “ডাল-ভাত” প্রকল্প নিয়ে ছড়ানো গুজব প্রভাব ফেলেছিল বলে গবেষকরা মত দিয়েছেন।

 

আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ টেনে প্রেস সচিব বলেন,

“ফক্স নিউজ যুক্তরাষ্ট্রে ভুয়া খবর ছড়িয়ে $৭৮৭.৫ মিলিয়ন জরিমানা দিয়েছে। ব্রিটেনে সংবাদপত্রগুলো নিয়মিত মানহানির মামলায় দণ্ডিত হয়।”
“কিন্তু বাংলাদেশে জনপ্রিয় টিভি ভাষ্যকাররা যাচাই না করেই মিথ্যা ছড়ান। শাস্তি নেই, তাই দায়ও নেই।”

 

শেষে তিনি বলেন,“যখন ভুলের কোনো পরিণতি থাকে না, তখন সত্য যাচাইয়ের প্রেরণাও থাকে না।”
 

আঁখি

×