ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি

প্রকাশিত: ২২:১৭, ৩ অক্টোবর ২০২০

জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের কথিত অভ্যুত্থানের ঘটনায় সামরিক বাহিনীতে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের হত্যার জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে তারা এই দাবি জানান। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা সেদিনের ঘটনা তদন্তের কমিশন গঠনের দাবি জানান। বলেন সেদিন কি ঘটনা ঘটেছিল জানতে চাই। ষড়যন্ত্রের বিচারের নামে যে কালিমা লেপন করা হয়েছে তা থেকে আমরা মুক্তি চাই। সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সাতাত্তরের ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা’ ব্যানারে ১৯৭৭ সালে অভ্যুত্থানের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত ও তাদের স্বজনরা মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও যারা এই ঘটনার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে তাদের নির্দোষ দাবিসহ সাত দফা দাবি জানান। এই ঘটনায় ২০ বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর কর্পোরাল গাজী গোলাম মাওলা হিরু মানববন্ধনে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্য যারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা। ওই দিন যারা সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ফাঁসি-কারাদন্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে স্ব-স্ব পদে সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ সরকারী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা। ষড়যন্ত্রের শিকার সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে পোষ্যদের যোগ্যতা অনুসারে সরকারী চাকরিতে নিয়োগ। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে যেসব মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি হয়েছে তাদের কবর চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্য যাদের ফাঁসি-কারাদন্ড ও চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের তালিকা প্রকাশ করা, মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন কিন্তু পাকিস্তানী সামরিক জান্তা তাদের বিভিন্ন বন্দীশিবিরে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করা এবং জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার। মানববন্ধন কর্মসূচীতে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের ছেলে নূরে আলম বলেন, সেদিন কী ঘটেছে, আমরা জানতে চাই। তদন্ত কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার বাবার চরিত্রে কালিমা লেপন করা হয়েছে। তা থেকে মুক্তি চাই। সাতাত্তরের ওই ঘটনার সঙ্গে জিয়াউর রহমান ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা জড়িত ছিলেন বলে দাবি করে তাদের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন। সাজাপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোবাহের আলীর ছেলে কেএম তমাল বলেন, ‘ওই দিন যাদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে, শাস্তি দেয়া হয়েছে, তারা নির্দোষ ছিলেন। বর্তমানে সরকারের কাছে একটাই দাবি, বাবা ও তার সহকর্মীরা যে নির্দোষ ছিলেন, সেটি প্রমাণ করে দিন। বাবা কিছুদিন আগে মারা গেছেন। ওই ঘটনার বিচার হলে বাবার আত্মা শান্তি পাবে’। মানববন্ধন আরও বক্তব্য রাখেন বিমানবাহিনীর সাবেক কর্পোরাল নুরুল ইসলাম, মুনির শরীফ, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সাইদুর রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান লেলিন, অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত সার্জেন্ট আলী আহমেদের স্ত্রী রওশন আরা বেগম, বাংলাদেশ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় প্রমুখ।
×