ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জন্মশতবর্ষে কবিতার পঙ্ক্তিমালায় মুজিবকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ১১:১৫, ২৪ মার্চ ২০২০

জন্মশতবর্ষে কবিতার পঙ্ক্তিমালায় মুজিবকে শ্রদ্ধাঞ্জলি

মনোয়ার হোসেন ॥ মুজিববর্ষে কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হবে স্বাধীনতার মহান স্থপতিকে। বছরব্যাপী আয়োজনের মাধ্যমে কবিতার পঙ্ক্তিমালায় শ্রদ্ধা-ভালবাসা জানানো হবে শেখ মুজিবকে। গদ্য-পদ্যের সমন্বিত শত টেক্সটে সাজানো হয়েছে সেই কাব্যিক আয়োজন। ধারাবাহিকভাবে বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশের আট বিভাগীয় শহরসহ ১১টি স্থানে অনুষ্ঠিত হবে আবৃত্তিনির্ভর অনুষ্ঠানসমূহ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্্যাপন বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে আবৃত্তিবিষয়ক উপকমিটি। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত সঙ্কটজনক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে উপকমিটি। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে রচিত হয়েছে ২৫টি নতুন কবিতা। বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাভাষী কবিরা লিখেছেন এসব কবিতা। সারাদেশের আটটি বিভাগীয় শহরসহ গণভবন, টুঙ্গিপাড়া ও মুজিবনগরে উচ্চারিত হবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত সে সব কবিতার পঙ্ক্তিমালা। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরের ১০টি স্থানে অনুষ্ঠিত হবে আবৃত্তিনির্ভর বিশাল আয়োজন। এক ও দুই ঘণ্টার দুটি ভিন্ন আঙ্গিকে সজ্জিত হয়েছে পরিবেশনা। দেশের ভেতর প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠিত হবে শত কণ্ঠে আবৃত্তি। উপস্থাপিত হবে সৈয়দ শামসুল হকের কলম থেকে আসা কালোত্তীর্ণ কবিতা ‘আমার পরিচয়’। থাকবে শিশুদের কুড়ি মিনিটের বৃন্দ পরিবেশনা। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত কবিতার সমষ্টিতে সাজানো প্রযোজনাটির গ্রন্থনা করেছেন মাসরুর জামান রনি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইতিপূর্বে দুই বাংলার কবিদের রচিত ৫০টি কবিতা নিয়ে থাকবে একটি পরিবেশনা। নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহাসহ এপার বাংলা ও ওপার বাংলার কবিরা মুজিববর্ষ উপলক্ষে লিখেছেন ২৫টি নতুন কবিতা। দেশের কবিদের লেখা ১৮টি এবং ভারতের কবিদের লেখা ৭টি নতুন কবিতার সম্মিলনে সজ্জিত হবে একটি আবৃত্তি পর্ব। থাকবে বঙ্গবন্ধু রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থদ্বয়ের নির্বাচিত অংশ থেকে ছয়টি করে মোট ১২ পর্বের পরিবেশনা। এই পরিবেশনাটির গ্রন্থনা করেছেন আবৃত্তিশিল্পী ইকবাল খোরশেদ। ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের সঙ্গে কিছু কবিতার সম্মিলনে সাজানো হয়েছে একটি প্রযোজনা। বঙ্গবন্ধুর দেয়া তিনটি নির্বাচিত বক্তৃতা পরিবেশিত হবে আবৃত্তির আশ্রয়ে। এই প্রযোজনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ, ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ এবং পুলিশ প্যারেডে দেয়া একটি ভাষণ। এ পরিবেশনাটির গ্রন্থনা করেছেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। বঙ্গবন্ধুর নিজ পছন্দের আটটি কবিতাও উঠে আসবে মুজিববর্ষের কাব্যিক আয়োজনে। মুজিবের পছন্দের এই আটটি কবিতা নির্বাচন করেছেন তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে আছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনারী তরী’ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ‘সাম্যবাদী’। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শিশুদের জন্য লেখা কবিতার সমষ্টিতে সজ্জিত হয়েছে একটি পরিবেশনা। মুজিববর্ষের আবৃত্তির আয়োজনে উচ্চারিতব্য গদ্য-পদ্য নিয়ে আবৃত্তিশিল্পী মোঃ আহ্্কাম উল্লাহ্্র সম্পাদনায় প্রকাশিত হবে ‘আবৃত্তিতে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক গ্রন্থ। মুজিববর্ষের কাব্যিক আয়োজনে আট বিভাগীয় শহরের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন স্থানীয় জেলার আবৃত্তিশিল্পীরা। আট বিভাগীয় শহরের সঙ্গে তিনটি অঞ্চলেও থাকবে আবৃত্তির অনুষ্ঠানমালা। এগুলোর মধ্যে টুঙ্গিপাড়া, মুজিবনগর ও গণভবনের অনুষ্ঠানগুলো হবে দুই ঘণ্টার। আবৃত্তির আশ্রয়ে দেশের বাইরের দশটি স্থানে ছড়িয়ে দেয়া হবে মুজিববর্ষের আয়োজন। সীমানা পেরুনো অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কলকাতা, শান্তি নিকেতন, ত্রিপুরা, শিলচর ও শিলিগুড়ি। বাকি পাঁচটি স্থান হচ্ছে নিউইয়র্ক, লন্ডন, সিডনি, ফ্রান্স ও টরেন্টো। জনকণ্ঠকে এসব তথ্য জানান আবৃত্তিবিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক বাচিকশিল্পী মোঃ আহ্কাম উল্লাহ্। তিনি বলেন, মুজিববর্ষে কবিতানির্ভর আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে আপাত অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তবে সঙ্কট কেটে গেলে ধারাবাহিকভাবে শুরু হবে অনুষ্ঠানমালা।
×