ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

গত বছর সাড়ে ৩৬ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে গেছেন

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৪ জানুয়ারি ২০২০

গত বছর সাড়ে ৩৬ লাখ বাংলাদেশী বিদেশে গেছেন

আজাদ সুলায়মান ॥ চাকরি ভ্রমণ পরিদর্শন চিকিৎসা ব্যবসায়িক ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে বিপুলসংখ্যক লোকজন গত বছর বিদেশে গেছেন। দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত দিয়ে তাদের বহির্গমন ও আগমন ঘটে। গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিদেশে যাতায়াতে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৭১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫৪। এরমধ্যে বিদেশে গেছেন ৩৬ লাখ ৬৭ হাজার ৩২৭ আর এসেছেন ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ১১৭। সিভিল এভিয়েশন ও পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্র জানায়, এ তথ্যে সামান্য হেরফের ঘটতে পারে। কিছুসংখ্যক যাত্রী দেশ-বিদেশে আনরিপোর্টেড রয়েছে, তবে সে সংখ্যা খুবই নগণ্য। বিদেশ ভ্রমণে সবার শীর্ষে প্রতিবেশী ভারত, যেখানে গত বছর ১২ লাখ বাংলাদেশী ভিসা নিয়ে নানান উদ্দেশে ভ্রমণ করেছেন। ’১৮ সালের তুলনায় সদ্যবিদায়ী বছরে এ সংখ্যা প্রায় তিন লাখ বেশি। প্রতিবছরই আকাশ পথে যাত্রীর বাড়ছে ৩ শতাংশ হারে, যা একটি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অন্যতম সোপান। সার্বিক পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এ বছর আরও ৫ লাখ বাড়তে পারে। এভিয়েশন, পর্যটন ও জনসংখ্যা রফতানি বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা শান্তি ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় বিদেশ ভ্রমণ আশাতীত হারে বাড়ছে। ইমিগ্রেশন পুলিশের মতে, শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই প্রতিদিন শতাধিক ফ্লাইট যাওয়া আসা করে। সোমবার ১২৭টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করেছে। এটি অনেক সময় কমবেশি হয়, যা গড়পড়তা ১১০টি হিসেবে ধরা হচ্ছে। প্রতিটি ফ্লাইটের গড় লোড কমপক্ষে ৮০ শতাংশ। শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশ গমন ও আগমনী যাত্রী ছিল ৬০ লাখ। চট্টগ্রামের শাহ আমানত দিয়ে বিদেশে গমন আগমনের সংখ্যা ১০ লাখ। বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারওয়ার ই জাহান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ মিলিয়ে সপ্তাহে ৫৬০ ফ্লাইট অপারেট হয়েছে। দৈনিক গড়ে ৮০ ফ্লাইট ওঠানামা করে। ১ জানুয়ারি থেকে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ও অভ্যান্তরীণ মিলিয়ে ১৮ লাখ যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে ১০ লাখই হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের। আন্তর্জাতিক যাত্রীর বহির্গমন ও আগমনীর অনুপাত প্রায় সমান। এই হিসেবে এ বছর শুধু শাহ আমানত দিয়েই কমবেশি ৫ লাখ বিদেশে গেছেন এবং কমবেশি ৫ লাখ বিদেশ থেকে এসেছেন। এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, সদ্যবিদায়ী বছরে শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহারকারী আন্তর্জাতিক ও অভ্যান্তরীণ মিলিয়ে ৮০ লাখ ৫৬ হাজার যাত্রীর সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ যাত্রী সংখ্যা ছিল ২১ লাখ, আন্তর্জাতিক ৫৯ লাখ ৫৬ হাজার। বিদেশে গমনকারীদের প্রিয় গন্তব্য হিসেবে সবার শীর্ষে ভারত। এরপর সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্যাঙ্কক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্য। ব্যবসা, ভ্রমণ ও সরকারী সফরকারীদের বড় একটা অংশ যাতায়াত করেছেন ইউরোপের কয়েকটি দেশে। ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস সূত্র জানায় গত বছর ওই অফিস থেকে ১৫ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। অর্থাৎ দৈনিক গড় সংখ্যা ৪ হাজার এক শ’। ৮০ শতাংশ বাংলাদেশী ভিসা ব্যবহার করে ভারত ভ্রমণ করেছেন। আবার ভারত ভ্রমণকারীদের মধ্যে শীর্ষে চিকিৎসাসেবা নিতে আগ্রহীরা। এরপরই রয়েছে পর্যটক। ব্যবসায়িক ও সরকারী ট্যুরও উল্লেখযোগ্য। গত বছর বিদেশে গমনকারী সাড়ে ৩৪ লাখের মধ্যে সোয়া ৭ লাখ ছিল শ্রমজীবী, যারা জীবিকার সন্ধানে দেশ ছেড়েছেন।
×