ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ১১:২০, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রদর্শনালয়ের প্রবেশ করতেই নজরে পড়ে নানারকম অস্ত্র ও গোলাবারুদ। একাত্তরে মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে গর্জে উঠেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রগুলো। পাকবাহিনীকে ঘায়েল করা সেসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কামান, মর্টারের গোলা, মেশিনগান, রাইফেল, বেয়নেট। মেঝেতে বিছিয়ে রাখা রয়েছে মিত্র বাহিনীর ব্যবহৃত কামান। আছে পাকবাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রও। কাঁচের বাক্সে সাজিয়ে রাখা হয়েছে স্বজনদের কাছে পাঠানো রণাঙ্গনে যুদ্ধরত মুক্তিযোদ্ধাদের আবেগঘন কিছু চিঠি। আরেকটি বাক্সে দেখা মেলে পাকিদের এদেশীয় দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীর পরিচয়পত্র। সেসব পরিচয়পত্রে রয়েছে তাদের ছবিসহ নাম-পরিচয়। এছাড়া প্রদর্শনালয়ের দেয়ালজুড়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালের দুর্লভ সব আলোকচিত্র। আছে মুক্তিযুদ্ধকালীন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পেপার কাটিং। আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তৃতার অডিও-ভিডিও ক্লিপ, মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র। স্মৃতি নিদর্শনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে আঁকা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, হাশেম খান, রফিকুন নবীসহ দশ প্রখ্যাত শিল্পীর চিত্রকর্মগুলো বাড়িয়ে প্রদর্শনীর ঔজ্জ্বল্য। সোমবার বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিদর্শনের এই বিশেষ প্রদর্শনীর সূচনা হয় জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী মিলনায়তনে। বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে জাতীয় জাদুঘরর আয়োজন করেছে মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শনের বিশেষ প্রদর্শনী এবং বিজয়ের গান ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আলোচনাসভার আয়োজন করে। বিকেলে আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শামসুজ্জামান খান। প্রধান বক্তা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবীব। আলোচনায় অংশ নেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী ও ম. হামিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ রিয়াজ আহম্মদ। জাদুঘরের সংগ্রহে থাকার প্রায় চার হাজার নিদর্শনের মধ্য থেকে ২০০ নিদর্শন প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। রয়েছে ১০০ আলোকচিত্র। মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র, বধ্যভূমি থেকে উদ্ধারকৃত মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কঙ্কাল, মাথার খুলি, হাড়ের টুকরোÑএসব কিছু স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। আরও থাকছে মুক্তিযুদ্ধের ওপরে প্রায় ১৫০ গবেষণাগ্রন্থ। রয়েছে পাকিস্তানী বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের ডায়েরি। প্রদর্শনী চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আলোচনা শেষে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী তিমির নন্দী ও দেবলীনা সুর।
×