ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বামীর নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে কলেজছাত্রী

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

স্বামীর নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে কলেজছাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী, ১৬ নবেম্বর ॥ তুই হা-ি-পাতিল ঘষবি। চুলার কাজ করবি। থাকবি আমার পায়ের নিচে। স্বামী ইমরান হোসাইনের এমন কঠোর নিষেধ উপেক্ষা করে অনার্স পর্যন্ত লেখাপড়া করায় তিন দিন আটকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। কিল-ঘুষি, লাথিসহ লাঠিপেটায় অচেতন হয়ে পড়ে। তারপরও ঘরের দোতলায় নিয়ে আটকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তলপেটের লাথিতে অচেতন হয়ে পড়ে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আটকে রেখে কিছুই খেতে দেয়া হয়নি। বারণ তো দূরের কথা, শ^শুর-শাশুড়ি, চাচা শ্বশুর পর্যন্ত উস্কে দিয়েছে। এমন নির্যাতনের শরীর নিয়ে এখন অসহ্য যন্ত্রণায় কলাপাড়া হাসপাতালের ১১ নম্বর বেডে কাতরাচ্ছে নিঃসন্তান তরুণী গৃহবধূ লাবনী আক্তার। শনিবার দুপুরে অঝোর ধারায় কান্নাজুড়ে দিয়ে নির্যাতনের ভয়াবহতা বলছেন আর বিচার চেয়ে আহাজারি করছেন এ গৃহবধূ। মেয়ের কান্নায় অসহায় বাবা আবুল কাশেমও কান্না জুড়ে দেন। অনার্সে (সমাজবিজ্ঞান) প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ মেধাবী লাবনীর স্বপ্ন ছিল কলেজের শিক্ষকতা করার। সেই স্বপ্নের দৌড়ে যখন অদম্য স্পৃহা আর ইস্পাত কঠিন মনোবল নিয়ে এগুচ্ছিল। প্রথম বর্ষে পড়ছিল, তখনই বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরই লেখাপড়ায় জগদ্দল পাথরের মতো বাধা হয়ে দাঁড়ায় চাকরিজীবী আনসার সদস্য ইমরান। প্রথম দফায় বই ছিঁড়ে ফেলে। তারপরও বাবার বাড়ি কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের আরামগঞ্জ গ্রামে থেকে বাবার খরচে লেখাপড়া চালিয়ে আসছিল। ২০১৬ সালের ২০ মে রাঙ্গাবালীর বড় বাইশদিয়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানপাড়া গ্রামের চাকরিজীবী জাকির হোসেনের ছেলে ইমরানের সঙ্গে বিয়ে হয় লাবনীর। বিয়ের আট মাস পরে তুলে নেয় তাকে। এরপরই আসল চেহারা ধরা পড়ে লাবনীর কাছে।
×