ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মায় প্রবল স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত, ট্রাকের দীর্ঘ লাইন

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১২ জুলাই ২০১৮

পদ্মায় প্রবল স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত, ট্রাকের দীর্ঘ লাইন

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচলে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। ¯্রােতের প্রতিকূলে ফেরিগুলো নৌ চ্যানেল পাড়ি দিতে পারছে না। বার বার ঘাটে ফিরে আসছে ফেরিগুলো। এই নৌরুটের নিয়মিত ১৬টি ফেরির স্থলে এখন চলছে মাত্র ১০টি ফেরি। ফেরি স্বল্পতায় শিমুলিয়া ঘাটে দেখা দিয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ লাইন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে যাত্রীরাও শিকার হচ্ছেন দুর্ভোগের। এ রকম চলতে থাকলে আসন্ন কোরবানির ঈদে এ নৌরুটে যাত্রী পারাপারে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিসির এজিএম শাহ খালেদ নেওয়াজ জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে পদ্মায় প্রচুর ¯্রােত দেখা দিয়েছে। ¯্রােতের গতির থেকে ফেরির ইঞ্জিনের গতি কম হওয়ায় ফেরিগুলো ¯্রােতের প্রতিকূলে টিকতে পারছে না। পদ্মার লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। ওই টার্নিং পয়েন্টের মুখ দিয়ে চ্যানেলে ঢুকতে একটি ফেরি আরেকটি ফেরিকে পাশ কেটে যাওয়ার সময় ¯্রােতের টানে ফেরি চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণাবর্তের এই ¯্রােতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ফেরিগুলো যানবাহন নিয়ে আবার একই ঘাটে ফিরে আসছে। বুধবার হতে রো রো ফেরি এনায়েতপুরী তিন দফা ঘাটে ফেরত এসেছে। এখন কেমলবমাত্র উচ্চগতি সম্পন্ন ফেরিগুলো চলাচল করছে। তাছাড়া রো রো ফেরিগুলোর ইঞ্জিনেও দেখা দিয়েছে সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে এসব রো রো ফেরিগুলো চলাচল করার এর ইঞ্জিনের গতিও হ্রাস পেয়েছে। এ রকম চলতে থাকলে আসন্ন কোরবানির ঈদে এ নৌরুটে যাত্রী পারাপারে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। তবে ফেরি চলাচল অব্যাহত রাখতে বিকল্প চ্যানেল খোঁজা হচ্ছে। বিকল্প চ্যানেল ফেরিগুলো একমুখী (ওয়ানওয়ে) ভাবে চলাচল করবে। অর্থাৎ যে চ্যানেল দিয়ে ফেরি যাবে, সে চ্যানেলে আর ওই ফেরি ফিরে আসবে না। ফেরিটি অন্য চ্যানেল দিয়ে ফিরে আসবে। এতে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। এ দিকে ফেরি চলাচল সীমিত হওয়ায় শিমুলিয়া ঘাটে দেখা দিয়েছে বিশাল যানজট। শুধু ঘাটের পার্কিং ইয়ার্ডই নয়। যানজট ছড়িয়ে পড়েছে মহাসড়কেও। মহাসড়কের পাশে এখন কয়েক শ’ পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। শিমুলিয়া ভাঙ্গা থেকে প্রায় ২ কিমি ছড়িয়ে পড়েছে মহাসড়কের পাশে ট্রাকের দীর্ঘ সারি। তাছাড়া ফেরি স্বল্পতার কারণে ঘাটেও দেখা দিয়েছে যানজট। ¯্রােতের প্রতিকূলে ফেরিগুলো গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগছে আগের থেকে অনেক বেশি। আবার কোন কোন ফেরি ¯্রােতের সঙ্গে টিকতে না পেরে ঘাটে ফিরে আসছে। এতে দূর পাল্লার যাত্রীরা ঘাটে আটকে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের যেন সীমা নেই। অপর দিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, এ নৌরুটে অধিকাংশ ফেরিই মান্ধাতা আমলের। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের ফেরি ইঞ্জিনের গতি নেই বললেই চলে। এসব ফেরির বডি কন্ডিশনও ভাল না। দীর্ঘ দিন এসব ফেরি পুনর্বাসনও করা হয়নি। তাছাড়া রো রো ফেরির ইঞ্জিনের অবস্থাও খারাপ। মাঝে মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এসব ফেরির ইঞ্জিন। আবার যাও ঠিক আছে সেগুলো ¯্রােতের প্রতিকূলে টিকতে পারছে না। এসব ফেরি ইঞ্জিন অতিশীঘ্রই পুনর্বাসন করা দরকার বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। নতুবা আসন্ন ঈদে এ নৌরুটে ফেরি চলাচলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
×