বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কোন্দল বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন। শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় রুদ্বদ্বার বৈঠকে অধিকাংশ নেতা দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় দ্রুত কোন্দল নিরসনে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এত কাজ করার পরও সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আমরা জিততে পারলাম না কেন? এর জবাবদিহি করতে হবে। বৈঠক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, আইন বিষয়ক সম্পাদক শ.ম রেজাউল করিম ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, অনেক বড় নেতা দলের প্রার্থীদের ভোট দেননি। অভ্যন্তরীণ কোন্দল না থাকলেও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারত বলেও নেতারা অভিমত তুলে ধরেন। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও হেরেছে আওয়ামী লীগপন্থী প্যানেল। এবার সমিতির ১৪টি পদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা জিতেছেন চারটি পদে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বাকি ১০টিতে জিতেছেন বিএনপিপন্থীরা।
ছাত্রলীগের সম্মেলন আগামী মে মাসে
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সম্মেলন মে মাসে করার নির্দেশ দেন। বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী মে মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে ছাত্রলীগের সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসেন সাইফুর রহমান সোহাগ ও এসএম জাকির হোসাইন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই বছর মেয়াদী কমিটির মেয়াদ গত বছরের ২৬ জুলাই শেষ হলেও সম্মেলন কিংবা কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়নি এতদিন। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের বিষয়ে বলেছিলেন, নেত্রীর ইচ্ছা স্বাধীনতার মাসে ছাত্রলীগ সম্মেলনের আয়োজন করুক। এরপর ১২ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ মার্চ সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন ও ১ এপ্রিল দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে এক মাস পর গণভবনে যান সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। সেখান থেকে বের হয়ে জাকির হোসাইন বলেন, তারা সম্মেলন করছেন না। আর শেখ হাসিনা সেটি অনুমোদনও করেছেন। শনিবার ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, ছাত্র সংগঠনের সম্মেলন হলে সংগঠন গতিশীল হয়, নতুন নেতৃত্ব উঠে আসে। তাই ছাত্রলীগের সম্মেলন যথা সময়ে হওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সম্মেলন মে মাসের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহেই যেন করা হয়। এ সময় মে মাসের ১১ তারিখ ছাত্রলীগের সম্মেলন করা যায় কি-না এমন আলোচনাও হয়। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের সম্মেলন, ছাত্রলীগকেই তারিখ নির্ধারণ করতে দিলে ভাল হয়। ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রোজার আগেই যেন সম্মেলন হয়। কারণ মে মাসের ১৭ তারিখে রোজা শুরু।
বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।