ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক লুটপাটের বৈধতা প্রদানকারী আইন বরদাশত করা হবে না

প্রকাশিত: ০২:২৭, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

ব্যাংক লুটপাটের বৈধতা প্রদানকারী আইন বরদাশত করা হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ব্যাংক-কোম্পানি আইন (সংশোধন)-২০১৭ সংসদে অনুমোদনের মাধ্যমে ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় পরিবারতন্ত্র কায়েমের পাঁয়তারার প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আহূত প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ব্যাংক লুটপাটের বৈধতা প্রদানকারী আইন বরদাশত করা হবে না সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকম-লীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানস নন্দী, বাসদ ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব জুলফিকার আলী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকম-লীর সদস্য জুলহাস নাইন বাবু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমিনুর রহমান বিশাল। সমাবেশ পরিচালনা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আকবর খান। বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের শেষ মুহূর্তে ব্যাংকের পরিচালকদের মেয়াদ ও সংখ্যা বিষয়ক সংশোধন এনে একক পরিবার থেকে দুইজনের পরিবর্তে চার জন এবং পরিচালকের মেয়াদ বিরতিহীন নয় বছর করা হয়েছে যা ব্যাংক খাতে পরিবারতন্ত্র কায়েম করবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, পাকিস্তান আমলে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ পরিবার কেন্দ্রিক ছিল। হাবিব পরিবার, সায়গল পরিবার, রেঙ্গুনওয়ালা পরিবার, আদমজী পরিবার এক বা একাধিক ব্যাংকের মালিক ছিল। ব্যাংককে কেন্দ্র করে ‘বাইশ পরিবার’ পাকিস্তানের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতো। বাইশ পরিবারের নিপীড়ন এবং ব্যাংকভিত্তিক ধনিকশ্রেণি যাতে গড়ে উঠতে না পারে সেকারণে আওয়ামী লীগ, ন্যাপসহ প্রগতিশীল দলসমূহ তাদের ৭০ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ব্যাংক জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ৭২ সালে পরিবারের মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো জাতীয়করণ করা হয়। ব্যাংক খাতকে পরিবারমুক্ত করা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়। নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যক্তি খাতে ব্যাংকগুলোর পারিবারিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার জন্য ব্যাংক কমিশন এক পরিবার থেকে একজনের বেশী পরিচালক নিয়োগ না দেয়ার সুপারিশ করেছিল। ব্যাংক মালিকদের চাপে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুইজন পরিচালক বিধান চালু করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৯৯ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রবর্তিত হওয়ার পর গত ২৬ বৎসর আইনের পরিচালক বিষয়ক ধারাটি ৬ (ছয়) বার সংশোধিত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে দলীয় তহবিল সংগ্রহের জন্য ব্যাংক মালিকদের থেকে অর্থ নিয়ে এই সংশোধন করা হয়েছে যা দেশে সাধারণ আমানতকারীদের স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন করবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান অর্থমন্ত্রী ছিলেন স্বৈরাচারী এরশাদের অর্থমন্ত্রী। তিনি সংসদে যে বিল পাস করিয়েছেন এই আইনের মধ্য দিয়ে লুটেরা ধনিকশ্রেণির লুটপাটের যে উৎসব শুরু করবে নেতৃবৃন্দ তার বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
×