ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভেঙ্গে পড়েছে চাঁপাই সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২০ জুলাই ২০১৭

ভেঙ্গে পড়েছে চাঁপাই সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ জেলার ১৬ লাখ মানুষের বৃহত্তর স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র অবলম্বন সদরের আধুনিক হাসপাতাল। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই দীর্ঘদিন। যারা রয়েছেন তারাও ইচ্ছামতো স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। ফলে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে চিকিৎসা সেবা। অনেক আগেই ৫০ থেকে একশত শয্যার হাসপাতাল করা হলেও আগের সব সকল ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। ২২ চিকিৎসকের পদ থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৪ জন। যাদের অনেককেই উপজেলা হাসপাতাল থেকে উঠিয়ে আনা হয়েছে। ফলে সেসব উপজেলার চিকিৎসা সেবা ধুকছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে তত্ত্বাবধায়কের পদটি পূরণ করা হয়নি। সিভিল সার্জন অতিরিক্ত এই পদের দায়িত্ব পালন করে থাকে। স্বাস্থ্যসেবা ৯টা থেকে শুরু হলেও কোন ডাক্তার চেম্বারে বসে না বেলা ১১টার আগে। সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, গাইনি অবস্, চক্ষু, সার্জারি, কার্ডিওলজি, নাক কান গলা, জুনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি এবং চিকিৎসা কর্মকর্তা, সহকারী সহ-মেডিক্যাল টেকনোলজি ও ফিজিও থেরাপি বিশেষজ্ঞ না থাকায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা রোগী কোন সেবা পাচ্ছে না। হৃদরোগ ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ না থাকায় রোগীরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে যাচ্ছে। হাসপাতালে এক্সরে, আলটাসোনগ্রাফি ও প্যাথলজি বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে যেসব রোগী রিপোর্ট নিয়ে আসে তারা প্রায় দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরের দিন আবার আসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে জনবল না থাকার কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। একশ শয্যার হাসপাতালে প্রতিটি বিভাগে তিনজন করে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র একজন। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের অবস্থা আরও করুণ। ভর্তি হয়ে ওয়ার্ডে কাতরালেও চিকিৎসক আসে না দিনের পর দিন। এখানকার বহু চিকিৎসক রয়েছে যারা বেসরকারী ক্লিনিকে ডিউটি করে হাসপাতালে আসেন। সাম্প্রতিককালে এসব অনিয়ম রুখতে রাজশাহী বিভাগীয় জনৈক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসব অনিয়ম স্বচক্ষে দেখে ডাক্তারদের সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। চাঁপাই নাগরিক কমিটির অভিযোগ বরাদ্দকৃত প্রয়োজনীয় ওষুধও দেয়া হয় না। এখানে উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের সময়ে হাসপাতালে প্রতি মাসেই বহু মূল্যবান ওষুধ ও উচ্চ মানের হায়ার এন্টিবায়েটিক আসলেও তা হাসপাতাল ডাক্তার ও কর্মচারীদের ইচ্ছায় বিশেষ ব্যক্তিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এদিকে দীর্ঘদিন হাসপাতালে কোন খাবার পানি সরবরাহ করা হয় না। হাসপাতালের পানিতে প্রচুর আয়রন থাকায় রোগীরা পান করতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন নদীর পানি রোগীরা পান করে থাকে।
×