ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মংলা-ঘষিয়াখালী নিয়ে লুটপাট বন্ধের দাবি জাতীয় কমিটির

প্রকাশিত: ০০:০৬, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

মংলা-ঘষিয়াখালী নিয়ে লুটপাট বন্ধের দাবি জাতীয় কমিটির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুন্দরবনকে নিরাপদ রাখার নামে বিকল্প নৌপথ ‘মংলা-ঘষিয়াখালী’ নিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ও লুটপাট বন্ধের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। নৌপথ সংলগ্ন এলাকায় দুটি ‘কৃত্রিম জোয়ারাধার’ তৈরি ও কথিত ৮৩টি খাল খননের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাত শতাধিক কোটি টাকার প্রশ্নবিদ্ধ প্রকল্প স্থগিতের দাবিও জানিয়েছে পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও সারা দেশে একটি পরিবেশবান্ধব সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবিতে দীর্ঘদিন কাজ করে আসা বেসরকারি এই সংগঠনটি। সোমবার সংগঠনের উপদেষ্টা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ মনজুরুল আহসান খান এবং সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান। এছাড়া সারা বছর গুরুত্বপূর্ণ এই চ্যানেলটির নাব্যতা রক্ষার অজুহাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দীর্ঘমেয়াদি খনন ও পলি অপসারণ কাজের যৌক্তিকতা ও সফলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। বিবৃতিতে কৃত্রিম জোয়ারাধারের বিরোধীতা করে বলা হয়, রামপাল ও মংলা এলাকার অর্ধশতাধিক সরকারী খালের অবৈধ বাঁধ ও পরিবেশবিনাশী সহ¯্রাধিক চিংড়ি উচ্ছেদ এবং খালগুলো যথাযথভাবে খনন করা হলে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এটা নিশ্চিত করা গেলে মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথে প্রবল জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়ে ‘পলি-পড়া’ অনেকাংশে বন্ধ হবে এবং চ্যানেলটি আগের মতো খরস্রোতা হয়ে উঠবে। সে ক্ষেত্রে রামপালের শতাধিক পরিবারকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ ও দেড় হাজার একর ফসলি জমি ধ্বংস করে জোয়ারাধার নির্মাণের প্রয়োজন হবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পটি বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে জাতীয় কমিটির নেতারা আরো বলেন, সাত শতাধিক কোটি টাকার এ প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির ইঙ্গিত রয়েছে। প্রকল্পে ৮৩টি খাল উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে সেখানে এতোসংখ্যক খাল নেই। একই খালের একাধিক নাম ব্যবহার করে প্রকল্পের খাতওয়ারি প্রস্তাবিত ব্যয়বিবরণীতে খালের সংখ্যা ও দৈর্ঘ্য বেশি দেখিয়ে অর্থবরাদ্দ বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। বিবৃতিদাতারা বলেন, মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি খনন ও পলি অপসারণের জন্য বিআইডব্লিউটিএ গত চার বছরে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেছে। ২০১৫ সালের শেষের দিকে শুধুমাত্র জোয়ারের সময় ছোট জাহাজ একমুখী চলাচলের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চ্যানেলটি খুলে দিয়ে পলি অপসারণ কাজ অব্যাহত রাখা হয়। পরবর্তী সময় চ্যানেলটি পুরোপুরি (দ্বিমুখী জাহাজ চলাচল) খুলে দেয়া হলেও গত দুই বছরে পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। এছাড়া জোয়ারের সময় ১৩ ফুট ড্রাফ্টের (তলদেশের গভীরতা) জাহাজ চলাচল করলেও ভাটার সময় ১০ ফুট গভীরতার বেশি জাহাজ চলতে পারে না। অথচ ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় আড়াই শ’ কোটি টাকা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে এবং দেড় বছর যাবত সেখানে মেইনটেনেন্স ড্রেজিং (সংরক্ষণ খাতের অর্থে খনন) চলছে। এতে জনগণের অর্থ অপচয় ও লুটপাট হচ্ছে বলে দাবি করেন তাঁরা। জাতীয় কমিটির নেতারা অবিলম্বে সরকারী খালগুলোর বাঁধ ও সকল চিংড়িঘের উচ্ছেদ এবং সুপরিকল্পিতভাবে খালগুলো খননের দাবি জানান।
×