ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধা বারীর জীবন বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

মুক্তিযোদ্ধা বারীর জীবন বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোঃ আব্দুল বারী। মাতৃভূমি রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তির সংগ্রামে। ’৭১-এ শক্ত হাতে রাইফেল চালিয়েছেন পাকিস্তানী হায়েনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ করে দেশের জন্য স্বাধীনতা আনলেও আজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জীবনের সঙ্গেই যুদ্ধ করে যাচ্ছেন এ মুক্তিযোদ্ধা। গত ১১ এপ্রিল এক সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাতপাতালে ভর্তি আছেন। প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার টাকা চিকিৎসা ব্যয় মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন একমাত্র ছেলে এসএম জুলফিকার হোসেন। তিনি র‌্যাব-১-এ সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) হিসেবে কর্মরত। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারীর চিকিৎসায় এগিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সবার সহযোগিতা চান ছেলে জুলফিকার। জুলফিকার জনকণ্ঠকে বলেন, বাবা গত ১১ এপ্রিল জরুরী কাজে সাতক্ষীরা উপজেলার কালীগঞ্জ থেকে খুলনা যাচ্ছিলেন। মাঝে দেবহাটা উপজেলার গাজিরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হন তিনি। প্রথমে খুলনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়ার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা দ্রুত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। ওই দিন থেকেই তিনি স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। জুলফিকার বলেন, শুক্রবার আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নিলেও শনিবার পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারীর সহযোদ্ধা তার বড় ভাইয়ের ছেলে এমএ রশিদ জনকণ্ঠকে বলেন, ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের দিকে ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে আমি ও আব্দুল বারীসহ আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করি। সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ, শ্যামনগর ও আশাশুনি এলাকায় আমাদের দায়িত্ব ছিল। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান দায়িত্ব ছিল স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া। আমাদের ১০ জনের একটি দল ছিল। তিনি বলেন, ওই সময়ে আমরা বেশ কয়েকটি বড় সম্মুখযুদ্ধেও অংশ নেই। একবার আমরা ৬০ থেকে ৭০ জন রাজাকারকে গ্রেফতার করে তাদের অস্ত্র আমাদের কব্জায় নিয়েছিলাম। আব্দুল বারী সম্পর্কে তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় আব্দুল বারী ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন আর আমি তখন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থী। আমরা একসঙ্গেই ট্রেনিং নিতে ভারতে গিয়েছিলাম। যুদ্ধের পর আব্দুল বারী আবার পড়ালেখা শুরু করে ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর সমাজকল্যাণ বিভাগে ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। খুব সাদামাটাভাবেই জীবনযাপন করেছেন আব্দুল বারী। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারীর ছেলে জুলফিকার আরও বলেন, বাবার চিকিৎসায় প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এত টাকার যোগান দিতে আমার সব পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকেও অনেক ধার করেছি। তিনি আরও বলেন, বাবা সরকারী চাকরি করতেন। ২০১৫ সালে অবসরে যাওয়ার পর তিনি যে টাকা পেয়েছিলেন, তা দিয়ে বাবা ও মা দুজনে এক সঙ্গে হজে গিয়েছিলেন। সেখানেই বাবার পেনশনের টাকা শেষ হয়ে গেছে। এখন বাবার চিকিৎসার অর্থ যোগান দিতে আমি সবার সহযোগিতা চাই।
×