ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় জামায়াতী শিক্ষকের রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা!

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩ মার্চ ২০১৭

সাতক্ষীরায় জামায়াতী শিক্ষকের রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা!

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের শিক্ষক প্রভাষক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি দেশের একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক একেএম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপসহ গুরুতর অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের কপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিকে এ নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন এবং শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এর আগে এই শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য ডিজিকে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে সুপারিশ পাঠানো হয়। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ ৬টি সুনির্দিষ্ট মামলা থাকার পরও বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশ করার কারণে ইতোমধ্যে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ফজলুল হক ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরীর সেক্রটারি ছিলেন। বর্তমানে তিনি কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমির এবং সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২৩ ফেব্রুয়ারি জারি করা এক আদেশে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ফজলুল হকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ, ফজলুল হক খুলনায় থাকেন। মাঝেমধ্যে তিনি সাতক্ষীরা সিটি কলেজে যাতায়াত করেন। রাষ্ট্রবিরোধী কাজে যুক্ত রয়েছেন মর্মে ফজলুুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তার কয়েকজন সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। কলেজ অধ্যক্ষ অবশ্য এ অভিযোগ বেনামী দাবি করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে বলেন, এটি মন্ত্রণালয় ও ডিজির বিষয়। জেলা জামায়াতের এ শীর্ষনেতা এমপিওভুক্তির জন্য গত বছরের ৯ অক্টোবর আবেদন করেন। আর এ আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদসহ কলেজের পরিচালনা পরিষদ রেজুলেশন করে তাকে এমপিওভুক্তির জন্য সুপারিশ করে। আর এমপিওভুক্তির আবেদনপত্রে ফজলুল হকের নামে কোন মামলা নেই মর্মে কলেজ অধ্যক্ষর সুপারিশে মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি স্বাক্ষর করেন। এদিকে, জামায়াত নেতার পক্ষে সুপারিশের খবর প্রচার হওয়ার পর সদর এমপির পক্ষ থেকে স্থানীয় সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে তার স্বাক্ষর নকল করা হচ্ছে বলে সকলকে সতর্ক করা হয়। তবে ফজলুল হকের এমপিওভুক্তির সুপারিশে এই এমপির স্বাক্ষর জাল নয় দাবি করে কলেজ অধ্যক্ষ আবু সাইদ জনকণ্ঠকে বলেন, অনেক সই করার কারণে দু’-একটি সই একটু ভিন্ন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। একজন জামায়াত নেতার পক্ষে সুপারিশ ও এমপিওভুক্তির আবেদনের ফরমে মামলা নেই উল্লেখ করার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আবু সাঈদ জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধান মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। এখন তিনি জামায়াতের রাজনীতি করেন না দাবি করে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানে ভিন্ন রাজনীতির লোক থাকলে সমস্যা কোথায়? উল্লেখ্য, নাশকতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ওই শিক্ষকের নামে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে ৬টি মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে ৫টি রয়েছে কলারোয়া থানায় আর পাটকেলঘাটা থানায় রয়েছে একটি।
×