ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী সমর্থকরা আগামী নির্বাচনে পরাজিত হবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

জঙ্গী সমর্থকরা আগামী নির্বাচনে পরাজিত হবে ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশবাসীর সামাজিক আন্দোলনে বাংলাদেশে জঙ্গীরা আপাতত পরাজিত হয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে এ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। জঙ্গীবাদ ও জঙ্গীসঙ্গীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতাদের রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই অব্যাহত থাকবে। যারা জঙ্গীদের সমর্থন দিচ্ছে, আগামী নির্বাচনে তারা আবারও পরাজিত হবে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাসদ আয়োজিত ‘জঙ্গীবাদ নির্মূল ও জঙ্গী-সঙ্গী বর্জন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাদের আবারও পরাজিত করতে হবে। নির্বাচনের মাঠে তাদের আসতেই হবে। এবার আর তারা মাঠ ছাড়তে পারবে না। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জঙ্গীদের সমর্থন করে যাচ্ছেন। গুলশানের হামলার পর প্রধানমন্ত্রী যখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তখন খালেদা জিয়া নির্বাচন চেয়েছিলেন। এর মূল কারণ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলকে ঘায়েল করা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জঙ্গীবাদ দমনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়েছে। যার জন্য জঙ্গীবাদ দমনে সফল হওয়ায় সারাবিশ্ব থেকে প্রশংসা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ নির্মূলে ১৪ দলের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী সমাবেশ হয়েছে। জঙ্গী উত্থান বন্ধ করার জন্য গ্রামের ইমাম থেকে শুরু করে শিক্ষক সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, লেখক, মুক্তিযোদ্ধা, শ্রমিক, নারী-পুরুষ, শিশু সবাই মিলে মানববন্ধন করেছে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোন আন্দোলন সফল হতে পারে না। জনগণের শক্তিই সব চেয়ে বড় শক্তি। একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল। তিনি বলেন, ১৪ দলের ঐক্য অটুট রাখতে হবে। কোনভাবেই ১৪ দলের মধ্যে বিভক্তি আনা যাবে না। জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি যুদ্ধাপরাধী, পনেরো আগস্টের খুনী, একুশে আগস্টের খুনী, আগুন সন্ত্রাসী এবং জঙ্গীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। এ পৃষ্ঠপোষকদের বিচার করতে আইন জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালেদা জিয়া ও বিএনপিসহ জঙ্গী মদদদাতা দলগুলোকে আইনের আওতায় এনে এ দেশের রাজনীতি থেকে তাদের বর্জন করতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার এ দেশে রাজনীতি করার কোন যোগ্যতা নেই। এ দেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে খালেদা জিয়া ও তাঁর দল যেভাবে রাজনীতি করছে, তা বন্ধ করতে হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, জাতীয় জাগরণ ছাড়া জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা রোধ করা যাবে না। পঁচাত্তরের পর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এ দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটেছে। যা পরবর্তী এইচ এম এরশাদ ও খালেদা জিয়ার হাত ধরে আরও বেগবান হয়েছে। খালেদা জিয়ার লজ্জা নেই। লজ্জা থাকলে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের পুত্রদের বিএনপির জাতীয় কমিটিতে স্থান দিতেন না। নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশিদ বলেন, জঙ্গীবাদ নির্মূলে পৃষ্ঠপোষকতা মূল সমস্যা। রাজনৈতিক, সামাজিক, দেশী-বিদেশী পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। একটি আইনী কাঠামো তৈরি করে এ পৃষ্ঠপোষকদের প্রতিরোধ করতে না পারলে, তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। পৃষ্ঠপোষকদের রেখে জঙ্গীবাদকে রুখে দেয়া সম্ভব না। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ বাঙ্গাল, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার এমপি।
×