ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ইকবালের হুমকিদাতা শনাক্ত, মুনতাসীর মামুনের হুমকির বিষয়ে পুলিশ এখনও নীরব

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

জাফর ইকবালের হুমকিদাতা শনাক্ত, মুনতাসীর মামুনের হুমকির বিষয়ে পুলিশ এখনও নীরব

শংকর কুমার দে ॥ নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনগুলো আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হিযবুত তাহরীর, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গী আইএস, আইএসআইএল এর নামে মোবাইল ফোনে এসএমএস ও কল করে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে অধ্যাপক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, প্রগতিশীল ব্যক্তিদের। সম্প্রতি হুমকি দেয়া হয়েছে প্রথমে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরকে। পরে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক ও লেখক মঈনুল আহসান সাবেরকে হুমকি দেয়া হয়েছে। পুলিশ দাবি করছে শেষের চারজনের ফোনের মালিককে তারা শনাক্ত করেছে। তবে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরের বিষয়ে এখনও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জঙ্গী সংগঠনগুলো নিষিদ্ধ হলেও তাদের তৎপরতা যে থেমে নেই তা একের পর এক মোবাইল ফোনে ও এসএমএস করে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে জানান দেয়া হচ্ছে। নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনগুলোর নামে এ ধরনের তৎপরতার নেপথ্যে জামায়াত-শিবিরের হাত থাকার বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর তা তদন্ত করে দেখছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। অধ্যাপক জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে হুমকি দেয়ার সময় নিজেকে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ হিসেবে পরিচয় দেয়। তবে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে হত্যার হুমকি দেয় বৃহস্পতিবার এক এসএমএসের মাধ্যমে। ওই এসএমএসে লেখা হয় ঙঁৎ ৎবমরড়হধষ ঃবধস সধু ংঃড়ঢ় ুড়ঁৎ যবধৎঃনবধঃ!—ওঝওখ. অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে এ ধরনের হুমকি বহুদিন যাবত দিচ্ছেন। কারণ, ড. জাফর ইকবালসহ অনেকে সাহস করে যুদ্ধাপরাধীর বিচারে সাক্ষ্য না দিলেও মুনতাসীর মামুন সাক্ষ্য দেন। তখন থেকেই মাঝেমধ্যে তাকে হুমকি দেয়া হয়। জঙ্গী সংগঠন আইএসআইএলও শাহরিয়ার কবিরকে হত্যার হুমকি দেয়ার সময়ে হিযবুত তাহরীর নাম ব্যবহার করা হয়। অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল জিডিতে উল্লেখ করেন, গত ১২ অক্টোবর স্ত্রীসহ ঢাকাস্থ বনানী ডিওএইচএস-এ অবস্থান করছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক। ওইদিন রাত সোয়া ১২টায় ইয়াসমিন হকের মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) আসে। সেখানে লেখা ছিল, ডবষপড়সব ঃড় ড়ঁৎ হবি ঃড়ঢ় ষরংঃ! ুড়ঁৎ নৎবধঃয সধু ংঃড়ঢ় ধঃ ধহুঃরসব. ধনঃ. একই তারিখ রাত ২টা ৩০ মিনিটে জাফর ইকবালের মোবাইল ফোনে একটি ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) আসে। তাতে লেখা যর ঁহনবষরবাবৎ! বি রিষষ ংঃৎধহমঁষধঃব ুড়ঁ ংড়ড়হ. ০১৬২৯৯৬৭৫৫১ মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে এই হুমকি আসে বলে জিডিতে উল্লেখ করেন জাফর ইকবাল। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একজন কর্মকর্তা বলেন, গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমিরেটাস আনিসুজ্জামান, ড. জাফর ইকবাল, ইতিহাসবিদ প্রফেসর মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক ও বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। যেসব মোবাইল থেকে ওই সময় হুমকি দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে ছিল এবারের হুমকি দেয়া ফোন নম্বরটিও। একই মোবাইল নম্বর থেকে মঈনুল আহসান সাবের, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান ও ইমতিয়াজ মাহমুদকে হুমকি দেয়া হলেও তাদের দেয়া হয়েছে আইএসের নামে। এর আগেও একই নম্বর থেকে হুমকি দেয়া হয়েছিল অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান ও মেজর (অব) আবদুল আজিজকে। তবে তাদের হুমকি দেয়া হয়েছিল জেএমবি টু সংগঠনের নামে। ওই সময়ে আবদুল হক নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ফায়যুরও তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তার সুরাহা হয়নি।
×