ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৭ আগস্ট ২০১৬

 শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি সার্ভিস চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। শুক্রবারও রো রো ফেরি চলতে পারেনি। চলেছে কে টাইপ ও ডাম্প ফেরিসহ ১১টি। জরুরীভিত্তিতে চাঁদপুর থেকে টাইপ ফেরি ‘কেতকী’ শুক্রবার বিকেলে বহরে যুক্ত করা হয়েছে। তবে বড় আকারের রো রো ফেরি বন্ধ রয়েছে পাঁচ দিন ধরে। এতে পারাপার মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। নাব্য সঙ্কটের কারণে রো রো ফেরি চলতে পারছে না। চ্যানেলে ড্রেজিং চলছে। কিন্তু ড্রেজার থাকার কারণে চ্যানেল সরু হওয়ায় রো রো ফেরি ঢুকতে পারছে না। তবে আজ শনিবার রাতে চ্যানেল থেকে ড্রেজার সরিয়ে নিলে কাল রবিবার থেকে রো রো ফেরি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ১৫-২০ দিন ধরে ড্রেজিং করলেও এর সুফল মিলছে না। দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার শিমুলিয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রী সাধারণ। আসন্ন ঈদে আরও চরম আকার এমনকি দেশের প্রধান এ ফেরি পারাপারে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। ভর বর্ষায় মাঝ পদ্মায় পানি না থাকায় ড্রেজারও আটকে যাচ্ছে। প্রবল স্রোতে ড্রেজিং বিঘিœত হচ্ছে। শুক্রবার ফেরি সার্ভিসটির কোন উন্নতি হয়নি। তাই উভয়পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের লাইন লম্বা হচ্ছে। শুক্রবার চার শতাধিক যান পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। গত বছরের এ সময়েও এই সঙ্কট সৃষ্টি হয়। পরে পদ্মা সেতুর নদী শাসনে ব্যবহৃত উচ্চক্ষমতার ড্রেজার ব্যবহার করে ফেরি চলাচল সচল রাখা হয়। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক শাহ নেওয়াজ খালেদ শুক্রবার জানান, ভর বর্ষায় পদ্মায় এখন চলছে নাব্য সঙ্কট। পানির অভাবে ঠিকমতো ফেরি চলতে পারছে না। পলি জমছে। লৌহজং টার্নিং পয়েন্টের মুখে দেখা দিয়েছে বিশাল আকারের ডুবোচর। এ টার্নিং পয়েন্টের মুখ হতে ড্রেজিং চ্যানেলের বিশাল এলাকাজুড়ে এখন বিরাজ করছে নাব্য সঙ্কট। সোমবার থেকে রো রো ফেরিগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একটি রো রো ফেরিতে যেখানে ৩০-৪০টি গাড়ি (প্রকারভেদে) বহন করতে পারে, সেখানে ৪টি যান নিয়েও রো রো ফেরি পদ্মা পাড়ি দিতে পারছিল না। একটি রো রো ফেরি চলার জন্য কম করে হলেও ৭ ফুট পানির প্রয়োজন। কিন্তু মাঝ পদ্মায় ড্রেজিং চ্যানেলে পানি রয়েছে মাত্র ৬ ফুট, যা রো রো ফেরি চলাচলের অনুপোযোগী। তাছাড়া একটি রো রো ফেরি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ১শ’ ২০ ফুট প্রশস্ত চ্যানেলের প্রয়োজন হলেও লৌহজং টার্নিংয়ের মুখে রয়েছে মাত্র ৯০ ফুট প্রশস্ত চ্যানেল। এতে আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে রো রো ফেরি চলাচল। তাই বাধ্য হয়েই রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিআইডব্লিউটিসির উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী (ডেজিং) সুলতাল আহমেদ খান জানিয়েছেন, একটি সমস্যা শেষ হতে না হতে আবার নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। লৌহজং টার্নিংয়ের মুখের ডুবোচরটি ড্রেজিং করে আমরা ফেরি চলাচলের উপযোগী করে তুলেছি। কিন্তু এরই মধ্যে পদ্মার মাঝে চ্যানেলের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার ফুট এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে আরেকটি ডুবোচর। এটি আপসারণের কাজ চলছে। কিন্তু বর্তমানে নদীর যে অবস্থা তাতে ড্রেজার ঠিকমতো নদীতে স্থাপন করা যাচ্ছে না। প্রচুর স্রোত আর ঘূর্ণাবর্তে ড্রেজারগুলো কাজ করতে পারছে না। এগুলোকে টাকবোর্টের সাহায্যে নদীতে ধরে রাখা হচ্ছে। নতুবা স্রোতের তোড়ে ড্রেজারগুলো বহুদূর চলে যেত। তিনি আরও জানান, নৌপথে এখন আমাদের ৭টি ড্রেজার কাজ করছে। তার মধ্যে ৫টিই সচল রয়েছে। কোন প্রকার প্রকৃতির দুর্যোগের শিকার না হলে ঈদের অনেক আগেই আমরা এ নৌপথে নাব্য ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।
×