ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশখালীতে নির্বাচন কর্মকর্তাকে পেটালেন এমপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২ জুন ২০১৬

বাঁশখালীতে নির্বাচন কর্মকর্তাকে পেটালেন এমপি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ইউপি নির্বাচনে পছন্দের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পেটালেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান। এর প্রতিক্রিয়ায় ওই উপজেলার ১১টি ইউপির নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত এমপির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আগামী ৪ জুন শনিবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। লাঞ্ছিত নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেনের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। পছন্দের নির্বাচন কর্মকর্তা না পেয়ে এমপি ও তার সমর্থকরা তার ওপর চড়াও হয় বলে জানান তিনি। নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীর ১১টি ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে কিছু ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার (প্রিসাইডিং অফিসার) তালিকা প্রদান করা হয়। কিন্তু সে তালিকা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হন এমপি মোস্তাফিজ। বুধবার দুপুরে নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেনকে ডেকে নেয়া হয় ইউএনও কার্যালয়ে। এ সময় এমপির সাঙ্গোপাঙ্গরাও উপস্থিত ছিলেন। ক্ষুব্ধ ভাষায় গালাগালের একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চড়, থাপ্পড় ও লাথি মারেন এমপি ও তার সঙ্গে থাকা সাঙ্গোপাঙ্গরা। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে বাঁশখালীতে ভোটগ্রহণ স্থগিত ও এমপির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ প্রদান করা হয়। নির্বাচন কমিশনের সচিব সিরাজুল ইসলাম জানান, এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জেলা নির্বাচন অফিসকে জানিয়েছেন। সে অনুযায়ী বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম এ প্রসঙ্গে জানান, ইসিতে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অবগত হয়েছি। অফিসিয়ালি নির্দেশনা এলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাঁশখালীর ১১টি ইউপিতে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তিনি জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেন। বাঁশখালী থেকে জনকণ্ঠের নিজস্ব প্রতিনিধি জানান, আগামী ৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগে স্থানীয় সাংসদ তার পছন্দমতো একটি তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করেন। কিন্তু সেই তালিকা গ্রহণে নির্বাচন অফিস অস্বীকৃতি জানায়। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচন অফিসার জাহিদ হোসেনকে প্রথমে এমপি তার মুঠোফোনে হুমকি প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরে অবহিত করেন। আর এ অভিযোগের খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, যার বহির্প্রকাশ ঘটে নির্বাচন কর্মকর্তাকে ইউএনও অফিসে ডেকে নিয়ে মারধরের মাধ্যমে।
×