ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাত কিমি যেতে ঘুরতে হয় ৭০ কিমি ॥ উন্নয়ন ব্যাহত

চরকিশোরগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি আট বছরেও চালু হয়নি

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৭ অক্টোবর ২০১৫

চরকিশোরগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি আট বছরেও চালু হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে গজারিয়া উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই। মেঘনা নদীর চরকিশোরগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি সার্ভিসের অভাবে নানা সম্ভাবনা বিনষ্ট হচ্ছে। এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত, প্রশাসনিক কর্মকা-, শিক্ষা কার্যক্রম নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নানারকম শিল্প পল্লী এখানে গড়ে তোলা হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কারণে। কিন্তু এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নেই কার্যকরী পদক্ষেপ। যার দৃষ্টান্ত মেঘনায় ফেরি সার্ভিস চালু না হওয়া। ২০০৭ সালে এই ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া সড়ক চলাচল উপযোগী করা হয়। মুক্তারপুর সেতু উদ্বোধনের দিনই এই ফেরি সার্ভিস চালুর ঘোষণা আসে। কিন্তু আট বছর পেরিয়ে গেলেও ফেরির ব্যবস্থা হয়নি। এখানে ফেরি চালুর জন্য সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান বাদল জানিয়েছেন, গজারিয়ার মেঘনার ফেরি চালুর গুরুত্ব উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র লেখা হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই। দফায় রিমাইন্ডার দেয়া হচ্ছে। তবে আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই এটি চালু হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস জানান, ফেরিটি চালুর জন্য জনপ্রতিনিধি হিসাবে যথা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা পরিষদ প্রশাসক আলহাজ মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, সরকার এ ব্যাপারে শীঘ্রই কার্যকরী ব্যবস্থা নেবে। জেলা শহর মুন্সীগঞ্জ থেকে গজারিয়া দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। কিন্তু সামান্য দূরত্বে স্থানটিতে আসতে হচ্ছে ১০ গুণ প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিয়ে ঢাকা, নারায়ণঞ্জ ঘুরে। এখন সাধারণ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ইঞ্জিন চালিত নৌকা। কোন লঞ্চ সার্ভিস পর্যন্ত নেই। নদী পার হওয়া ছাড়াও গজারিয়া থেকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটের সঙ্গে ট্রলার সার্ভিস চালু রয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে এই ট্রলার বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা যাত্রী পারাপার করে থাকে। এমনকি গজারিয়া থানা পুলিশকে আসামি আনানেয়া করতে হয় ট্রলারের মাধ্যমে। ধলেশ্বরী-মেঘনা নদী পথে ট্রলারে করে উপজেলাবাসীকে আসা-যাওয়া করতে হয়। জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় জেলার অপর চারটি উপজেলায়ও গজারিয়াবাসীকে যোগাযোগে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে জেলা শহরের পূর্বাঞ্চলের গজারিয়াকে মেঘনা নদী বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। এতে করে জেলার ৫টি উপজেলার সঙ্গে গজারিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নদীপথ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম ও অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ হয়ে সড়ক পথে মুন্সীগঞ্জে আসা যাওয়া করে থাকেন। আবার গজারিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে উপজেলার রসুলপুর এলাকার ফুলদী নদী। ফলে গজারিয়া উপজেলা সদর, থানা ও হাইওয়ে সড়কে যেতে ট্রলার দিয়ে পার হতে হয় গজারিয়ার জনগোষ্ঠীকে। এসব কারণে অবহেলিত জনপদ গজারিয়া। গজারিয়া উপজেলা দেশের একটি গুরুত্ব¡পূর্ণ স্থান হলেও এখানে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
×