ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

বিশ্ব চাকরিবাজারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী: কেন বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে এমআইটি গ্রাজুয়েটরা?

প্রকাশিত: ১২:০১, ২৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:০৩, ২৮ জুন ২০২৫

বিশ্ব চাকরিবাজারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী: কেন বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে এমআইটি গ্রাজুয়েটরা?

ছবি: প্রতীকী

বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারেও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) এর গ্রাজুয়েটরা যেভাবে এগিয়ে থাকেন, তাতে এটি শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়—এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বমানের কর্মসংস্থানের এক পরাকাষ্ঠা। কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ২০২৬ অনুযায়ী, এমআইটি শিক্ষার মান, গবেষণা, শিল্পসংযোগ ও চাকরির বাজারে সাফল্যের দিক থেকে পূর্ণ ১০০ নম্বর পেয়েছে—যা একটি বিরল কৃতিত্ব।

চাকরির দুনিয়ায় এমআইটি’র বাড়তি সুবিধা

এমআইটি শুধু একটি নাম নয়, এটি একটি প্রতীক—যার প্রতি গুগল, গোল্ডম্যান স্যাকস, ম্যাকিনজি, নাসা কিংবা অজস্র স্টার্টআপের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো অগাধ আস্থা রাখে। প্রতিষ্ঠানটি ‘এমপ্লয়ার রিপুটেশন’ এবং ‘এমপ্লয়মেন্ট আউটকাম’- এই দুই বিভাগেই সর্বোচ্চ ১০০ নম্বর অর্জন করেছে। অর্থাৎ, নিয়োগদাতাদের দৃষ্টিতে ‘এমআইটি স্নাতক’ মানেই সমস্যা সমাধানে দক্ষ, প্রযুক্তিতে পারদর্শী এবং বাস্তবচিন্তাধারায় অভ্যস্ত এক পেশাদার।

এই আস্থার পেছনে রয়েছে এমআইটি’র শক্তিশালী ক্যারিয়ার সার্ভিস, শিল্প-শিক্ষক গবেষণা সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক—যা ছাত্রদের প্রতিটি ধাপে পেশাগত সহায়তা দিয়ে থাকে।

ক্লাসরুম ছাড়িয়ে বাস্তব শিক্ষার অভিজ্ঞতা

শুধু পড়াশোনা নয়, এমআইটি শিক্ষার্থীদের শেখায় কীভাবে হাতে-কলমে বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে হয়। এখানে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত এমনভাবে নির্ধারিত, যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী পান ব্যক্তিগত পর্যায়ের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা। গর্ডন ইঞ্জিনিয়ারিং লিডারশিপ প্রোগ্রাম কিংবা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট রিসার্চ অপারচুনিটি প্রোগ্রামের (UROP) মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়েই পেয়ে যান ইন্ডাস্ট্রি-মাফিক কাজের অভিজ্ঞতা। ফলে তারা শুধু চাকরি পাওয়ার জন্য নয়, বরং সেই চাকরির সংজ্ঞা বদলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন।

গবেষণা ও একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্বে অদ্বিতীয়

শুধু ক্লাস নয়, এমআইটি একাডেমিক জগতে গবেষণার জন্যও একটি বাতিঘর। একাডেমিক রেপুটেশন ও ‘সাইটেশন পার ফ্যাকাল্টি’- এই দুই বিভাগেও তারা পূর্ণ ১০০ নম্বর পেয়েছে। এখানকার শিক্ষকরা শুধুই পড়ান না—তারা নোবেলজয়ী, বিশ্ববিখ্যাত উদ্ভাবক, এবং সিলিকন ভ্যালির সফল উদ্যোক্তা।

বিশেষত্ব হলো এমআইটি’র আন্তঃবিভাগীয় উদ্ভাবনী পরিবেশ। এখানে ইঞ্জিনিয়ারিং আর অর্থনীতি একসাথে মেলে, কম্পিউটার সায়েন্সের সঙ্গে চলে জীববিজ্ঞান, আবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মিলিত হয় জননীতি বিশ্লেষণে। ফলে ছাত্ররা হন বহুমাত্রিক সমস্যা সমাধানে সক্ষম।

বিশ্বমানের শিক্ষার ছায়ায় ভবিষ্যতের নেতৃত্ব

এমআইটি শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, এটি এমন এক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শিক্ষার্থীরা হয়ে ওঠেন ভবিষ্যতের উদ্ভাবক, উদ্যোগতা ও বিশ্বনেতা। বাস্তবমুখী শিক্ষা, পেশাদার সহায়তা, এবং গবেষণাভিত্তিক প্রশিক্ষণের সমন্বয়ে এমআইটি শিক্ষার্থীদের এমনভাবে গড়ে তোলে, যা তাদের বিশ্ব চাকরির বাজারে দেয় অপ্রতিরোধ্য এক সুবিধা।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×