-
হালের দাবি
ইমামুল ইসলাম মুরাদ
আমি, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার চাই!
আমি নিরাপত্তা চাই! আমার যান-মালের-
নিরাপদ জীবন আর ব্যাংকে সংরক্ষিত আমানতের সুরক্ষা;
আমি নাগরিকত্বের সুষ্ঠু সুবিন্যস্ত সুবিধা চাই!
কালু মিয়ার বিকলাঙ্গ কন্যার প্রতিবন্ধী ভাতা,
অশীতি-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধের বয়স্ক ভাতা,সায়রা বানুর
বিধবা ভাতা, মিসেস কোরেশীর রিটায়ার্ড ভাতা চাই।
আমি সনদ চাই!
শুধু একাডেমিক সনদ নয়; প্রতিটি যুবকের বেকারত্বহীনতার সনদ।
আমি অনুমোদন চাই!
ভূমিহীন মরম আলীর, খাস জমি বন্দোবস্ত নথির!
আমি নিষ্পত্তি চাই!
যীশু খ্রীস্টের রক্তাক্ত ছবির মতো ঝুলন্ত আদালতের ঐ সব মোকাদ্দমার।
আমি জরিমানা চাই !
ভেজাল মিশ্রিত অসাধু খাদ্য ব্যবসায়ীর মতো
আজকের শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবসায়ীর।
আমি ন্যায্য মূল্য চাই!
কৃষকের ফসলের আর শ্রমিকের স্বেদজলের!
আমি একটি প্রজ্ঞাপন চাই!
অকুশল প্রকৌশলীর, অদক্ষ চিকিৎসকের,
আদর্শচ্যুত শিক্ষকের, ঘুষখোর সান্ত্রীর-
আর অযোগ্য-অপটু আমলার সাসপেন্ড পত্রের।
আমি অগ্নিসাৎ চাই!
ভুয়া মিডিয়ার ছাপাখানায়,
ঘুষের আখড়া খ্যাত প্রতিটি দপ্তরে দপ্তরে !
আমি ফাঁসি চাই!
জনতার সম্মুখে মঞ্চ কম্পিত করে মিথ্যা ভাষণদাতা ভ- নেতার!
** শ্রাবণের হোমল্যাস সিন্ড্রোম
নুরুন্নাহার মুন্নি
বহুকাল ধরে বর্ষাকে দেখি- কদম ফুলের সজারু মলাটে, ঝুম বৃষ্টি,
হাসনাহেনা ফোটা মাতাল গন্ধে নমনীয় হয় ঘুমন্ত শালিক;
বহুকাল ফোঁটা ফোঁটা প্রেমের উদ্গ্রিণ, মাঠে-ঘাটে,
বিলের আনাচে কানাচে- শাপলার শরীর বেয়ে-
স্নিগ্ধ জল ফুলে ওঠে শরীরে শীতল স্পর্শের স্ফটিক দানা,
আবার বর্ষাকে দেখি, পাহাড় ধস বীভৎস রঙ,
মৃত্যুর আহাজারি আর বানভাসি মানবতার-
শূন্য পাতিলে।
বর্ষার জ্যাকেট ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসে আর্তনাদের গলিত পারফিউমের গন্ধ,
প্রার্থনার পবিত্র করিডোর থেকে ভেসে আসে-
বর্ষা বিদায়ী সুর,
জীবন থেমে যায়, শুরু হয় বর্ষাপূর্তির উৎসব,
খচিত হয় শ্রাবণের হোমল্যাস সিনড্রোম।
** শিরোনামহীন
রেবেকা ইসলাম
এক একটি বেণী বাঁধার মতো করে
স্মৃতিগুলো বাঁধছি,
কোনটা আবার পা-ুলিপির ভেতর জড়োসড়ো
কবিতার অলঙ্কার হয়ে,
দিন গড়িয়ে যায় পারদের মতো,
প্রতিটি দুপুর পোড়ে,
ক্লান্তিতে নুইয়ে পড়ে সন্ধ্যা,
অতঃপর প্রশান্তির হাই তোলে সূর্য,
মনে পড়ে সেই সাহসী সন্ধ্যার বিরিশিরি নদী
অবহেলায় জমে যাওয়া প্রতিজ্ঞাগুলোর মুখ
কন্টিকারি ফুলের কাঁটায় আহত বিকেলের সুখ,
সূঁইয়ের ভেতরে সুতো ভরতে না পারার অসহায়ত্ব
এখনো কুরে কুরে খায়
এখনো ভাসায় ধরণীর তল।