
ছবি: সংগৃহীত।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ডাল একটি অত্যন্ত পরিচিত এবং জনপ্রিয় উপাদান। সহজলভ্য, সাশ্রয়ী ও স্বাদের দিক থেকে প্রিয় এই খাবার শুধু মুখরোচকই নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্যও ভীষণ উপকারী। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, নিয়মিত ডাল খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে রোগমুক্ত রাখার পাশাপাশি দীর্ঘস্থায়ী সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নিচে তুলে ধরা হলো প্রতিদিন ডাল খাওয়ার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা—
১. প্রোটিনের চমৎকার উৎস:
ডালে রয়েছে উচ্চমাত্রার উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, যা শরীরের পেশি গঠন, কোষ পুনর্গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিরামিষভোজীদের জন্য ডাল অন্যতম প্রোটিন সরবরাহকারী উপাদান।
২. হার্ট সুস্থ রাখে:
ডাল ফ্যাট ও কোলেস্টেরল মুক্ত হওয়ায় এটি হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা আঁশ (ফাইবার) খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
৩. হজমে সহায়ক:
ডালে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার হজম শক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে কার্যকর। নিয়মিত ডাল খেলে অন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকে।
৪. শক্তি যোগায়:
ডাল থেকে পাওয়া জটিল কার্বোহাইড্রেট শরীরকে দীর্ঘসময় শক্তি দেয়। এটি হঠাৎ রক্তে গ্লুকোজ বৃদ্ধির ঝুঁকি কমায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
৫. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক:
ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের জন্য ডাল অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাবার।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে:
কম ক্যালোরি ও বেশি ফাইবারযুক্ত ডাল দীর্ঘসময় পেট ভরাট রাখে, যা অপ্রয়োজনীয় খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়।
৭. ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী:
ডালে থাকা ভিটামিন বি, জিঙ্ক এবং প্রোটিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে অতিরিক্ত ঘি বা তেল দিয়ে ডাল রান্না না করাই ভালো। সাদাসিধা ভাজি বা ঝোল আকারে ডাল খাওয়া শরীরের জন্য অধিক উপকারী। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের ডাল যেমন মসুর, মুগ, চনা বা অড়হর ডাল পর্যায়ক্রমে খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এক বাটি ডাল শুধু স্বাদ নয়, বরং পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি পরিপূর্ণ খাবার হিসেবে কাজ করে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ডালকে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করাই হতে পারে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর সিদ্ধান্ত।
মিরাজ খান