
ছবি: সংগৃহীত।
মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। এটি দেহের বিষাক্ত পদার্থ ছেঁকে ফেলা, পরিপাক সহায়তা, রক্ত বিশুদ্ধকরণ এবং শক্তি সংরক্ষণসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে দিন দিন লিভারের জটিলতা বাড়ছে। তাই লিভার সুস্থ রাখতে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকরা।
নিচে তুলে ধরা হলো এমনই কয়েকটি প্রাকৃতিক ও উপকারী খাবারের তালিকা, যা লিভার সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে—
১. পালং শাক ও সবুজ শাকসবজি:
পালং শাক, কলমি শাক, ব্রকলি ও পাতাকপি লিভার পরিষ্কারে সহায়তা করে। এগুলোতে থাকা ক্লোরোফিল উপাদান লিভারের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
২. লেবু ও অন্যান্য সাইট্রাস ফল:
লেবু, কমলা ও জাম্বুরায় থাকা ভিটামিন সি লিভারের এনজাইম উৎপাদন বাড়ায়। এটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ারের কাজ করে এবং লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. রসুন:
রসুনে থাকা সালফার যৌগ লিভারের এনজাইমকে সক্রিয় করে। এটি লিভার থেকে বিষাক্ত পদার্থ ছেঁকে ফেলতে সহায়তা করে।
৪. বেরি জাতীয় ফল:
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ও ব্ল্যাকবেরিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভার কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়।
৫. বিটরুট:
বিটরুটে থাকা বেটালেইন যৌগ লিভারের টক্সিন দূর করে এবং রক্ত পরিশোধন প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৬. কফি (পরিমিত পরিমাণে):
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন এক বা দুই কাপ কফি পান করলে লিভারে ফ্যাট জমা কমে এবং সিরোসিসের ঝুঁকি হ্রাস পায়। তবে অতিরিক্ত কফি পান না করাই ভালো।
৭. বাদাম:
বাদামে থাকা ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে সুরক্ষিত রাখে এবং ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর।
লিভার সুস্থ রাখতে শুধু খাবার খেলেই হবে না। এর সঙ্গে তেল-মসলা ও ভাজাভুজি খাবার এড়িয়ে চলা, অ্যালকোহল বর্জন, নিয়মিত পানি পান এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় উপরের খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। একইসঙ্গে রুটিন চেকআপ করানো এবং হেপাটাইটিসের টিকাও সময়মতো নেওয়া জরুরি।”
লিভার শরীরের ভারসাম্য রক্ষায় অপরিহার্য অঙ্গ। তাই সময় থাকতে লিভার সচেতনতা বাড়ানো এবং খাদ্যাভ্যাসে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনাই হতে পারে সুস্থ জীবনের প্রথম ধাপ।
মিরাজ খান