
ছবি: সংগৃহীত।
একটি সম্পর্কে বিশ্বাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তবে অনেক সময় দেখা যায়, এক পক্ষ আরেক পক্ষের কাছে মিথ্যে বলছে—তা ছোট হোক বা বড়। প্রশ্ন হলো, কীভাবে বুঝবেন আপনার সঙ্গী আপনাকে সত্য বলছেন, নাকি কিছু গোপন করছেন?
সম্প্রতি মনোবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কিছু বিশেষ আচরণ ও দেহভঙ্গির মাধ্যমে খুব সহজেই বোঝা যেতে পারে, কেউ মিথ্যা বলছে কি না। নিচে তুলে ধরা হলো এমনই কয়েকটি লক্ষণ ও পরামর্শ—
দেহভঙ্গি ও চোখের ভাষা:
মানুষ যখন মিথ্যে বলে, তখন তাদের শরীর নিজেই সত্য বলে ফেলে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেউ যদি কথা বলার সময় চোখাচোখি করতে না পারেন, অপ্রয়োজনীয়ভাবে চোখ ঘোরান বা অতিরিক্ত হেসে যান—তাহলে সেটা সন্দেহের ইঙ্গিত হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে না মিললে, বারবার এমন হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত ব্যাখা দেওয়া:
কেউ যদি খুব সহজ একটি প্রশ্নের জবাবে অপ্রয়োজনীয় ব্যাখা দেন বা কথার ভিতর কথায় মূল প্রশ্ন এড়িয়ে যান, তবে তিনি হয়তো কিছু লুকোচ্ছেন। অনেক সময় মিথ্যাবাদীরা অকারণে অতিরিক্ত যুক্তি দেখিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চান।
আচরণের হঠাৎ পরিবর্তন:
দীর্ঘদিনের পরিচয়ে একজন মানুষ সাধারণত নির্দিষ্ট ধরণের আচরণ করেন। হঠাৎ করেই যদি আপনার সঙ্গী স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করতে শুরু করেন, কথাবার্তায় অসংলগ্নতা দেখা যায়—তবে তা সন্দেহের কারণ হতে পারে। যেমন, কোনো প্রশ্ন করলে রাগান্বিত হয়ে ওঠা বা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেওয়া।
দেরিতে জবাব দেওয়া বা প্রশ্ন এড়ানো:
প্রশ্ন করলে যদি সঙ্গী খানিকক্ষণ চুপ থাকেন বা প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে বুঝতে হবে তিনি হয়তো কিছু লুকোচ্ছেন। মিথ্যা বলার আগে অনেকেই সময় নিয়ে ‘ভাবতে’ থাকেন কীভাবে বিষয়টি বললে ধরা পড়বেন না।
প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে অতিরিক্ত গোপনীয়তা:
বর্তমান সময়ে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোবাইল বা প্রযুক্তি একটি বড় ভূমিকা রাখে। সঙ্গী যদি হঠাৎ মোবাইল লুকাতে শুরু করেন, পাসওয়ার্ড বদলান বা আপনার সামনে ফোন ব্যবহার না করেন, তাহলে সেটা সম্পর্কের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, কেউ মিথ্যা বলছে কি না, তা বোঝার জন্য শুধু আচরণ পর্যবেক্ষণ করাই যথেষ্ট নয়। বরং খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সন্দেহের বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। প্রতিটি সম্পর্কে বিশ্বাস, বোঝাপড়া ও সংলাপই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সঙ্গীর আচরণে পরিবর্তন, কথাবার্তায় অস্পষ্টতা কিংবা প্রযুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা—এসবই হতে পারে মিথ্যার আভাস। তবে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে সংলাপ ও বিশ্বাসের মাধ্যমে বিষয়টি যাচাই করা জরুরি। কারণ, অকারণে সন্দেহও একটি সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
মিরাজ খান