ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মানসিক চাপ হতে পারে উপকারীও! কতটা বেশি হওয়া ক্ষতিকর? কীভাবে করবেন নিয়ন্ত্রণ?

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ০৭:০৮, ২ জুন ২০২৫

মানসিক চাপ হতে পারে উপকারীও! কতটা বেশি হওয়া ক্ষতিকর? কীভাবে করবেন নিয়ন্ত্রণ?

ছবি: প্রতীকী

করোনার পর মানুষের মনে এক প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে—স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কতটা হলে তা সহনীয়, আর কখন তা হয়ে ওঠে বিষাক্ত বা জীবনবিনাশী?

যুক্তরাষ্ট্রের সিনসিনাটি ইউনিভার্সিটির মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও গবেষক লসন আর. উলসিন বলছেন, ‘ভালো স্ট্রেস শরীর-মনকে তৎপর রাখে, কিন্তু বিষাক্ত স্ট্রেস আমাদের দেহের প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকেই ভেঙে দেয়।’

বিষাক্ত স্ট্রেসের প্রভাব কী?

২০২৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চমানের স্ট্রেস বয়স বাড়ার গতি বাড়িয়ে দেয়। ধূমপান বা দরিদ্রতা যেভাবে স্বাস্থ্য ক্ষয় করে, বিষাক্ত স্ট্রেসও তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ।

ড. উলসিন ব্যাখ্যা করেন, বিষাক্ত স্ট্রেসে সবচেয়ে আগে দেখা দেয় মাথাব্যথা, দুর্বলতা, পেটের সমস্যা বা ঘুমহীনতার মতো উপসর্গ। ধীরে ধীরে এগুলো রূপ নেয় বড় রোগে—যেমন ডায়াবেটিস, হাঁপানি বা হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা।

আপনি কি বিষাক্ত স্ট্রেসে ভুগছেন?

একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব ব্যক্তিরা শৈশবে চার বা তার বেশি মানসিক আঘাত পেয়েছেন, তাদের প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।

একইভাবে, যাদের চার বা তার বেশি দীর্ঘস্থায়ী রোগ আছে—তারা প্রতিদিনের ছোট সমস্যা নিয়েই মানসিক বিপর্যয়ে পড়েন।

এছাড়া দারিদ্র্য, নিরাপত্তাহীনতা, পারিবারিক অশান্তি, একাকিত্ব, দূষিত পরিবেশ—সবকিছুই যুক্ত হতে পারে বিষাক্ত স্ট্রেসে।

স্ট্রেস কমানোর উপায় কী?

প্রথম ধাপ: স্ট্রেস চিহ্নিত করা ও চিকিৎসকের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা।

দ্বিতীয় ধাপ: লাইফস্টাইল মেডিসিন বা জীবনধারা-ভিত্তিক চিকিৎসা।

এই চিকিৎসায় খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুম ও মানসিক প্রশান্তির নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তোলা হয়। যেমন: ন্যাশনাল ডায়াবেটিস প্রিভেনশন প্রোগ্রাম, অর্নিশ ‘UnDo’ হৃদরোগ কর্মসূচি, ভেটেরান্স অ্যাফেয়ার্স PTSD প্রোগ্রাম।

এই কর্মসূচিগুলো প্রমাণ করেছে—নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সহায়তা পেলে মানুষ নিজের স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

ভালো অভ্যাস, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা আর সহানুভূতিশীল চিকিৎসা—এই তিনটি মিলেই বিষাক্ত স্ট্রেসের দমন সম্ভব। এখন সময় হয়েছে স্ট্রেসকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা ও চিকিৎসার মূলধারায় আনার।

 

সূত্র: স্ক্রল ডট ইন।

রাকিব

×