ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

চলার ছন্দে পায়েল

নুসরাত খানম ঋতু

প্রকাশিত: ২৩:১১, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

চলার ছন্দে পায়েল

.

জামান সাহেব সবসময় তার স্ত্রীকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। তিনি চান তার স্ত্রী অলঙ্কারে সজ্জিত হয়ে থাকুক। ঘরে ঢুকেই যেন শাড়ি, চুড়ি পরা গোছানো বউ দেখতে পান। মেয়েরা সাধারণত যেসব গহনা পরে সেগুলোর মধ্যে জামান সাহেবের পায়েল খুবই পছন্দ। তিনি নিত্যনতুন ধরন ডিজাইনের পায়েল তার স্ত্রীকে উপহার দেন। তার মধ্যে আবার কিছু আছে যেগুলো পায়ে দিলে ঝুম ঝুম শব্দ হয়। যখন শব্দ করে সারা ঘর ঘুরে বেড়ায় ভীষণ ভালোলাগে তার। তেমনি কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সময় হালকা রঙ্গের শাড়ির সঙ্গে একটি পায়েল বা দুই পায়ে নূপুর যেন তার থাকতেই হয়। পায়েল এমন একটি গহনা যা ধারাবাহিকভাবে নিত্যনতুন সাজে শতক ধরে উঠে এসেছে নারীর পায়ে।

সেই প্রাচীন কাল থেকেই মেয়েরা পায়ে অলঙ্কার পরিধান করা শুরু করে। তখনকার সময়ে পিতলের তৈরি একটি বিশেষ ধরনের গহনা মেয়েরা পায়ে পরত যা মল নামে পরিচিত ছিল। এটি যেহেতু পিতল দিয়ে তৈরি হতো তাই ওজনে  যথেষ্টই ভারি হতো। তবুও তা দিয়ে নিজের সৌন্দর্য বর্ধনে নারীর কোনো কার্পণ্য ছিল না। কালক্রমে পায়ের গহনার পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে তা নূপুর এবং পায়েলে রূপ নিয়েছে। পায়ের গহনায় একটি নূপুর আর অন্যটি পায়েল। এক পায়ে পায়েল পরা হয়। আর দুই পায়ে যেটি পরা হয় তা হলো নূপুর। এগুলোর মধ্যেও রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। যেমন কিছু আছে একদম সাদামাটা আবার কিছু ডিজাইন করা। কিছু পায়েলে আবার ঝুনঝুনি লাগানো হয়। এগুলো দুই পায়ে পরলে একাধারে শব্দ হতে থাকে আর এক পায়ে পরলে থেমে থেমে শব্দ হয়। পায়ের সমস্ত গহনাগুলো তৈরির জন্য জনপ্রিয় ধাতু হলো রূপা। তবে এখন রূপা ছাড়াও অন্যান্য ধাতুর তৈরি পায়েলও বেশ জনপ্রিয়। পুঁতি, বিডস, সুতা, কাচ, কড়ি, কাঠ, প্লাস্টিকসহ নানাকিছুর তৈরি পায়েল হাল ফ্যাশনে ট্রেন্ডি। পায়েল বা অ্যাংলেটের নকশায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। ফুল, পাখি, চাঁদ, তারা, ত্রিভুজ, হার্টসহ নানা শেপে নানা নকশায় তৈরি হচ্ছে পায়েল। মিনা করা রঙবেরঙের স্টোন বসানো ভারি পায়েলও অনেকের পছন্দ। কিছু পায়েলের চেইনে রয়েছে ঝালর বসানো, সঙ্গে যোগ হয়েছে হরেক রঙের স্টোন। সাদা পাথরের পায়েলও রয়েছে পছন্দের শীর্ষে। পাথরের তৈরি অ্যান্টিক পায়েলও এখন মেয়েদের পছন্দ। পায়েল হলো এমন একটি গহনা যা সবধরনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ থেকে শুরু করে পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গেও এর জুটি হয় চমৎকার। ধবধবে সাদা ফতুয়া এবং কালো রঙ্গের জিন্সপ্যান্ট পরা খোলা চুলের একজন তরুণী যদি কালো সুতায় পুতির নকশা করা একটি পায়েল পরে তখন তার সৌন্দর্য অসাধারণ হয়ে ধরা দেবে। জুতা পায়ের অলঙ্কারের মধ্যে সামঞ্জস্য করতে উঁচু হিল কিংবা ফিতা দেওয়া স্যান্ডেলের সঙ্গে পায়েল পরলে যেন খুব হালকা নকশার হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ফিপ-ফপ ধরনের জুতার সঙ্গে নূপুর দারুণ মানানসই। চটি বা খোলা ধরনের স্যান্ডেলের সঙ্গে ভালো লাগবে সব ধরনের পায়ের গহনা। বিভিন্ন মার্কেট ফুটপাথ থেকে শুরু করে ছোট বড় শপিংমলগুলোতে পাওয়া যায় এসব গহনা। তবে ভালো মানের পায়েল বা নূপুর কিনতে মায়াসির, আড়ং, পিরান, যাত্রা, বিবিয়ানা, বিশ্বরঙসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে ঘুরে আসতে পারেন।

ছবি : অনলাইন

 

×