ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

স্বাধীনতার রং লেগেছে ফ্যাশনে

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৮ মার্চ ২০১৬

স্বাধীনতার রং লেগেছে ফ্যাশনে

ষড়ঋতু ম-িত এ দেশ আকর্ষিত করেছে বহু দেশের মানুষকে। মানচিত্রের বুকে ছোট্ট এ দেশ যেন গর্ব করার মতো একটি দেশ। বুক চিরে বয়ে যাওয়া নদী, পাখির কলতান, সোনার ফসল সব কিছু মিলিয়েই যেন পরিপূর্ণ একটি দেশ। অপরূপ সুন্দর এ দেশ। মনে হয় শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোন ছবি। এ ছবি দেখে যেন চোখের পলক পড়ে না। বার বার দেখার সাধ জাগে। বহু কবি-সাহিত্যিক এ দেশকে ভালবেসে মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন গান, কবিতা ও উপন্যাস। এদেশের মাটি সোনার ফসল ফলয়। লাল-সবুজের পতাকা পতপত করে উড়তে থাকে। জানান দেয় একটি পরিপূর্ণ দেশের। লাল-সবুজের পতাকার দিকে তাকালেই এক ধরনের দৃঢ়প্রত্যয় কাজ করে। মনে হয় অনেক অব্যক্ত কথা ধারণ করে রেখেছে পতাকাটি। পরিচয় করিয়ে দেয় স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের। মনে করিয়ে দেয় আমরা মুক্ত স্বাধীন জাতি, যে জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। অধিকার অর্জনে সচেষ্ট এক জাতি, যে জাতি স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে জানে। দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রামের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। আর এই নয় মাসের বিনিময়ে বিশ্ব চিনল এক নতুন দেশ, নতুন জাতিকে। নতুন করে জানাল কাদামাটির নরম এ মানুষগুলো নিজেদের অধিকার আদায়ে বাঘের হুঙ্কার দিয়ে কাঁপিয়ে দিতে পারে বিশ্ব। যে কোন সম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে পারে। স্বাধীনতার জন্য যখন মন ছুটে যায় তখন কোন মারণাস্ত্রই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। পুরো বিশ্ব সে দৃশ্য অবলোকন করেছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। ২৫ মার্চের পাক হানাদারের অতর্কিত হামলার যথোপযুক্ত জবাব দেয় বাঙালী। ২৬ মার্চ ঘোষণা করা হয় স্বাধীনতা দিবস। আর তাই স্বাধীনতা দিবস আজও তরুণ প্রজন্মের কাছে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। প্রেরণা যোগায় নিষ্ঠার পথে নির্ভীক যোদ্ধা হওয়ার। শুধু একটি দিবস হিসেবে নয়, এর বর্ণোচ্ছটায় বদলে যায় জীবনের গতিপথ, সাহস যোগায় নতুন শপথ নেয়ার। আর এ কারণেই স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য এত বেশি। বর্তমান সময়েও এর প্রভাব প্রতিদিনের পথ চলার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রতি মুহূর্ত মায়াবী এক আবহে জড়িয়ে রাখে। এরই প্রভাব পড়েছে দেশীয় ফ্যাশন ট্রেন্ডে। মানুষ এখন শুধু প্রয়োজনীয় পোশাক-পরিচ্ছেদ কেনাকাটায় সীমাবদ্ধ নেই। ফ্যাশন সচেতন হিসেবে নিজেদের মূল্যবোধ মানিয়ে তুলেছে বহুগুণে। উৎসব-পার্বণ ছাড়াও দিবসভিত্তিক ফ্যাশনগুলো আকর্ষণ করে ক্রেতাদের। যার ফলে ফ্যাশন হাউসগুলো প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকে দিবসভিত্তিক পোশাক তৈরিতে। সাড়াও মিলছে ভালই। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো লাল-সবুজের আবহে তৈরি করছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক। যেমনÑ পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শর্ট পাঞ্জাবি, শর্ট কামিজ, শাড়ি, টি-শার্ট ইত্যাদি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলো ক্রেতাদের সামনে তুলে এনেছে স্বাধীনতা দিবসের পোশাক। এ বিষয়ে তরুণ ডিজাইনার সিমিন এশা বলেন, কয়েক বছর আগেও ক্রেতাদের মধ্যে দিবসভিত্তিক পোশাক কেনার প্রতি তেমন কোন আগ্রহ ছিল না। অবশ্য তখন হাতের নাগালে দিবসভিত্তিক পোশাকের এত সমারোহ ছিল না। তবে বর্তমান সময় পরিবেশ পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন এসেছে। যুগের চাহিদার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ড। শুধু ফ্যাশন ট্রেন্ডেই নয় পুরো মার্চ মাস জীবন যাপনেও চলে এক ধরনের পরিবর্তন। ফুটপাত দিয়ে হেটে যাওয়া পতাকা বিক্রেতাও যেন এক ধরনের আবহ ছড়ায়। ঘর সাজানোতে থাকে লাল সবুজের ছোঁয়া। পোশাক গুলোর দামও হাতের নাগালে। পাঞ্জাবি ৮০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা, সালোয়ার কামিজ ১০৫০ থেকে ৩২০০ টাকা, টপস্ ৬০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা, শাড়ি ১২০০ টাকা থেকে ৪৫০০ টাকা, ফতুয়া ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এছাড়া বিভিন্ন স্বাধীনতা সম্বলিত পোট্রেট মগ ৪০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা, ঘড়ি ৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা, স্কার্ফ ৩০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় মিলবে। স্বাধীনতা দিবসের মহিমা সমুন্নত রাখতেই ফ্যাশন জগতের দিবসভিত্তিক পোশাক বা স্বাধীনতা দিবসের পোশাক সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, কখনই কোন বিষয় যেন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে না যায়। স্বাধীনতা দিবসের কোন অমর্যাদা যেন না হয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীনতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। মডেল : লিনা ও বর্ষা পোশাক : বর্ষা ক্রিয়েশন মেকআপ : রেড
×