
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের আকাশসীমায় চীনের সামরিক অস্ত্রবাহী বিমান ঘুরপাক খাচ্ছে—আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন উত্তাপ। এমনকি, তেহরানে ঢোকার পূর্ব মুহূর্তেই রাডার বন্ধ করে দিচ্ছে চীনা কার্গো বিমানগুলো। এই রহস্যজনক কর্মকাণ্ড ঘিরে গোটা বিশ্বে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
গোপনে ইরানে চীনের সামরিক সহায়তা?
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ও ফ্লাইট রাডার ২৪ এর বরাতে জানা যায়, চীনের উত্তরাঞ্চল থেকে উড্ডয়ন করা বোয়িং 747 ধরনের বেশ কয়েকটি কার্গো বিমান তুর্কমেনিস্তানের আকাশসীমা পেরিয়ে ইরানের দিকে এগিয়ে যায়। তবে ইরানের আকাশে ঢোকার আগেই এসব বিমান রাডার বন্ধ করে দেয়। কাগজপত্রে বিমানগুলোর চূড়ান্ত গন্তব্য লুক্সেমবার্গ দেখানো হলেও সেগুলো কখনোই ইউরোপের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এসব কার্গো বিমান মূলত সামরিক রসদ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয় এবং এরা সরকারি পর্যায়ে বিশেষ আদেশে কাজ করে থাকে।
ইসরাইল হামলার পরপরই রহস্যময় যাত্রা
গত ১৩ জুন ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আকস্মিক বিমান হামলা চালায়। ঠিক তার পরদিন থেকেই রহস্যজনকভাবে চীনা কার্গো বিমানগুলোর গমনাগমন শুরু হয় ইরানের দিকে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এসব বিমানে ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক মিসাইল তৈরির হাজার হাজার টন উপকরণ পাঠাচ্ছে চীন। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও এমন অভিযোগ তুলেছে।
ইরান-চীন সম্পর্ক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
চীন ও ইরান দীর্ঘদিন ধরে কৌশলগত অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার বিরোধিতা করায় দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। তেল সরবরাহের দিক থেকে ইরান চীনের অন্যতম বড় জ্বালানি উৎস। প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ ব্যারেল তেল ইরান থেকে চীনে রপ্তানি হয়।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়া ঘিসেলি বলেন, “ইরানের বর্তমান সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন হলে চীনের অর্থনীতি ও জ্বালানি খাতে বড় প্রভাব পড়তে পারে। ফলে এই সংঘাতময় মুহূর্তে চীনের পক্ষ থেকে ইরানকে সমর্থন দেওয়া অস্বাভাবিক নয়।”
পশ্চিমা উদ্বেগ বাড়ছে
ইরান-চীন ঘনিষ্ঠতা এবং সামরিক সহযোগিতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বিগ্ন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সহযোগিতা একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে, তেমনি বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে নতুন সংঘাতের দ্বার খুলে দিতে পারে।
ইমরান