
ছবি: সংগৃহীত
ইরান তার সামরিক সক্ষমতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের একটি অত্যাধুনিক ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি মার্কিন ডলার। ইরানের সামরিক মহলে ঘটনাটিকে একটি বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। বুধবার মধ্য ইরানের ইসফাহান প্রদেশে ভূপাতিত করা হয় ইসরায়েলি হারমিস ৯০০ মডেলের এই চালকবিহীন আকাশযান (ড্রোন)।
দর্শনে বোঝার উপায় না থাকলেও এই ড্রোনটির আর্থিক মূল্য এবং কৌশলগত গুরুত্ব ছিল ব্যাপক। হারমিস ৯০০ হলো ইসরায়েলের তৈরি একটি নজরদারি ও আক্রমণাত্মক ড্রোন, যা ইলবিদ সিস্টেমস কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি। এটি বিশ্বের অন্যতম বেশি ব্যবহৃত সামরিক ড্রোন, যার সাহায্যে শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।
ইরানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই সেটিকে লক্ষ্য করে আঘাত হানা হয়। ‘সারফেস টু এয়ার’ টাইপ মিসাইল ব্যবহার করে এটি ধ্বংস করা হয়। পরে ইরানের প্রতিরক্ষা বিভাগ হামলার ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যায় ড্রোনটি আছড়ে পড়ছে মাটিতে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) এ ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ড্রোনটি ধ্বংস হলেও কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে এমন ধরনের উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক যান প্রতিপক্ষের হাতে পড়লে, তার নকশা ও প্রযুক্তি ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।
এদিকে ইরানও তার শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা তুলে ধরেছে। দেশটির সামরিক ভাণ্ডারে রয়েছে ‘বাভার ৩৭৩’-এর মতো উন্নত প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা শত্রুর যেকোনো আকাশ হুমকি মোকাবেলায় কার্যকর।
এই ঘটনায় আবারও প্রমাণ হলো, আকাশ প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় ইরান ক্রমেই আরও আধুনিক ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের মতো সামরিক পরাশক্তির ড্রোন ভূপাতিত করে তারা শুধু কৌশলগত সাফল্যই অর্জন করেনি, বরং নিজেদের প্রতিরোধ ক্ষমতারও দৃঢ় বার্তা দিয়েছে বিশ্বের কাছে।