ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ক্ষমার আড়ালে আর্থিক দায় মাফ, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে ভুক্তভোগীরা

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ১৮ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:৪৫, ১৮ জুন ২০২৫

ক্ষমার আড়ালে আর্থিক দায় মাফ, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ক্ষতির মুখে ভুক্তভোগীরা

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক প্রেসিডেনশিয়াল ক্ষমা ও দয়া প্রদানের ফলে ভুক্তভোগী ও ফেডারেল সরকারের পাওনা অর্থ—যার পরিমাণ ১.৩ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে—পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা।

মঙ্গলবার প্রকাশিত মার্কিন কংগ্রেসের হাউজ জুডিশিয়ারি কমিটির ডেমোক্র্যাটদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের দেওয়া প্রায় ১৬০০টি ক্ষমা ও দয়ার আদেশে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন অভিযুক্তরা। এসবের মধ্যে এমন মামলাও রয়েছে, যেখানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আদালত ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ বা ফেডারেল জরিমানা আদায়ের আদেশ দিয়েছিল।

ব্যক্তিগত লাভ ও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক মিত্রদের এবং সমর্থকদের উপকার করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ইলেকট্রিক ভেহিকল কোম্পানি নিকোলা-এর প্রতিষ্ঠাতা ট্রেভর মিলটন। আদালতের নথি অনুসারে, তার বিরুদ্ধে শত শত মিলিয়ন ডলারের প্রতারণার অভিযোগ থাকলেও, ট্রাম্পের ক্ষমা পাওয়ায় তিনি জরিমানা পরিশোধ না করেই দায়মুক্তি পেয়েছেন।

জানুয়ারি ৬-এর হামলাকারীদেরও ক্ষমা

প্রতিবেদনটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলে হামলায় অভিযুক্তদের মধ্যেও অনেককে ক্ষমা করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই পুলিশ কর্মকর্তাদের মারধর এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্টের জন্য আদালতের আদেশ অনুযায়ী ২০৫০ থেকে ৩ লাখ ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করেছিল। এখন ক্ষমার ফলে এ অর্থ আদায়ের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

আইনগত জটিলতা এবং বিচার বিভাগের অবস্থান

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বলছে, একবার আদেশপ্রাপ্ত ক্ষতিপূরণ সাধারণত ফেরত দেওয়া হয় না। তবে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন—আপিল চলমান থাকা অবস্থায় ক্ষমা পাওয়া—সেক্ষেত্রে বিচারের ফয়সালার অপেক্ষায় আছে আদালত।

একইসঙ্গে, কিছু অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে আবেদন করেছেন তাদের ইতোমধ্যে প্রদান করা জরিমানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। তবে বিচারকরা এখনো এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি।

হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া

এই অভিযোগের জবাবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হ্যারিসন ফিল্ডস বলেন, “ডেমোক্র্যাটরা অব্যাহতভাবে রাজনীতিকরণ করছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অন্যায় রাজনৈতিক মামলাগুলোর বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করছেন এবং যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের পরই ক্ষমা প্রদান করছেন।”

ক্ষমা আদেশ রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করলেও, এই বিষয়টি এখন আদালতের বিবেচনায় রয়েছে। আগামী দিনে এই আদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব কেমন হয়, তা নির্ভর করবে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা ও আইনপ্রণেতাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের উপর।

আঁখি

×