ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রাম্প ও মিলারকে নিয়ে পোস্ট, এবিসি নিউজের চাকরি হারালেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক

প্রকাশিত: ১০:০২, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১০:০৩, ১১ জুন ২০২৫

ট্রাম্প ও মিলারকে নিয়ে পোস্ট, এবিসি নিউজের চাকরি হারালেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ সাংবাদিক টেরি মোরান আর এবিসি নিউজে ফিরছেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপ-চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বিতর্কিত মন্তব্য’ করার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় সংবাদমাধ্যমটি।

এবিসি এক বিবৃতিতে জানায়, মোরানের করা পোস্ট তাদের সম্পাদনা নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ফলে তার চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

‘ঘৃণাকে খাওয়াদাওয়ার মতো গ্রহণ করেন মিলার’

রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (আগে টুইটার)-এ দেওয়া সেই পোস্টে টেরি মোরান বলেন, ‘স্টিফেন মিলার ঘৃণার দিক থেকে বিশ্বমানের। তিনি ট্রাম্পবাদের মস্তিষ্ক। তার ঘৃণাই তার আত্মিক পুষ্টি—সে যেন ঘৃণাকেই খায়।’

ট্রাম্প সম্পর্কে মোরান লেখেন, ‘তার ঘৃণা কৌশলগত, নিজের মহিমা প্রতিষ্ঠার একটি উপায় মাত্র। কিন্তু মিলারের ঘৃণা গভীর, অন্তর থেকে উঠে আসে।’

পোস্টটি দ্রুত মুছে ফেললেও তা ভাইরাল হয়ে যায়। ট্রাম্প প্রশাসনের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন মোরান। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স একে ‘স্টিফেন মিলারকে ঘৃণ্যভাবে কলঙ্কিত করার প্রচেষ্টা’ বলে আখ্যা দেন।

২৬ বছরের সম্পর্কের ইতি

৬৫ বছর বয়সী টেরি মোরান ১৯৯৭ সাল থেকে এবিসি নিউজে কর্মরত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ‘নাইটলাইন’ শো-এর সহ-উপস্থাপক ছিলেন এবং মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ও জাতীয় রাজনীতি কাভার করতেন।

মাত্র এক মাস আগেই মোরান ট্রাম্পের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন, যেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তুমি খুব একটা ভদ্র আচরণ করছো না।’

ঘটনার পর ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিভেন চিয়াং এক রূঢ় প্রতিক্রিয়ায় এক্স-এ লেখেন, ‘Talk s**, get hit”*, অর্থাৎ বাজে কথা বললে তার মূল্য দিতে হবে।’

এবিসির কঠিন সময়

মোরানের বিতর্কিত মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন এবিসি নিউজ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বিতর্কে জড়িয়েছে। ডিসেম্বর মাসে ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়ে ট্রাম্পের প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি সংক্রান্ত মানহানি মামলার মীমাংসা করে তারা। ওই মামলায় জর্জ স্টেফানোপোলাস ভুলভাবে দাবি করেছিলেন, ট্রাম্প ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

গন্তব্য অনিশ্চিত, বিতর্ক নিশ্চিত

মোরানের ভবিষ্যৎ কর্মস্থল এখনও অজানা হলেও তার বিতর্কিত মন্তব্য ওয়াশিংটন মিডিয়া মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনেকে একে ‘অভিব্যক্তির স্বাধীনতা বনাম প্রতিষ্ঠানের নিয়ম’—এই দ্বন্দ্বের একটি প্রকাশ হিসেবেও দেখছেন।

এবিসি বলেছে, তারা সাংবাদিকদের স্বাধীনতা সমর্থন করে, তবে ‘নিরপেক্ষতা ও দায়বদ্ধতার সাথে’। মোরান, সেই ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেননি—এই অভিযোগেই তাকে বিদায় নিতে হলো।

 

সূত্র: আল জাজিরা।

রাকিব

×