ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

চীনা কনস্যুলেটে হামলা

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

চীনা কনস্যুলেটে হামলা

পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচীর ক্লিফটন এলাকায় অবস্থিত চীনা কনস্যুলেটের কাছে সন্ত্রাসী হামলার সময় গুলি বিনিময়কালে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছে বলে ডন নিউজ টিভি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) সাউথ জাভেদ আলম ওধো দুই পুলিশ নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চীনা কনস্যুলেট ভবনের বাইরে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও ডনের। এক বিবৃতিতে ইমরান ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ঘটনার পেছনে কারা কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনা হচ্ছে পাকিস্তান ও চীনের অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত সহযোগিতার বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ধরনের ঘটনা চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পড়বে না। দুদেশের সম্পর্ক হিমালয়ের চেয়েও শক্তিশালী ও আরব সাগরের চেয়েও গভীর। ঘটনার অল্প কিছুক্ষণ পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হামলা প্রতিরোধ করায় তাদের প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন হামলাকারী নিহত হয়েছে। আমরা চীনা কনসাল জেনারেলের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। পাকিস্তান ও চীন একসঙ্গে দেশের উন্নয়ন বন্ধ করতে চায় এমন শক্তিকে পরাজিত করবে। বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ হামলার দায় স্বীকার করেছে। ডন নিউজ টিভি জানিয়েছে, সিন্ধু প্রদেশের গবর্নর ইমরান ইসমাইল ঘটনাটি জেনেছেন। তিনি এজন্য সিন্ধু প্রদেশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশের কাছ থেকে ঘটনার পূর্ণ প্রতিবেদন চেয়েছেন। সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহও ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে চীনা কনসাল জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং তাকে নিশ্চিত করেছেন যে, পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (এআইজি) ড. আমির আহমেদ শেখ জানান যে, গুলির ঘটনা এখন শেষ হয়েছে। ওই এলাকাটি এখন পুলিশ ও রেঞ্জাররা ঘিরে রেখেছেন। আমি গণমাধ্যমের মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চাই যে, সেখানে কি ঘটেছে তার স্পষ্ট ছবি দিনের শেষে জানাতে পারব। সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি যখন ঘটে তখন ওই এলাকায় পুলিশ ও রেঞ্জাররা সবাই তাদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হামলাকারীরা তাদের গাড়িতে বসে ছিলেন। তবে তারা চীনা কনস্যুলেটের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। হামলাকারী তিনজন গুলিতে নিহত হয়েছেন। একটি বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড দল বিস্ফোরক উপাদান আরও আছে কিনা তা চেক করে দেখছে। প্রতিরক্ষা ঠিকাদার ও বিশ্লেষক ইকরাম শেহগালের নিরাপত্তা রক্ষীরা কনস্যুলেটের ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে, হামলাকারীরা প্রথমে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। শেহগাল বলেন, হামলায় যখন পুলিশ নিহত হয় তখন নিরাপত্তা রক্ষীরা কনস্যুলেট ভবনের সামনের গেট বন্ধ করে দেয়। দ্রুতই নিরাপত্তা রক্ষীরা গেট বন্ধ করে ভবনের অভ্যন্তরে থাকা বেসামরিক লোকদের ও চীনা কর্মীদের নিরাপদ একটি জায়গায় সরিয়ে নেন। ডন নিউজ টিভির মতে, এলাকাটিতে নিñিদ্র নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। ওই এলাকার স্কুল ও খাবারের রেস্তরাঁগুলো এলাকাটি পুরোপুরি পরিষ্কার না করা পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ডন নিউজ টিভির খবর, সকাল প্রায় নয়টা ৩০ মিনিটে গুলির ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা হামলার সময় ওই এলাকায় একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান বলে জানিয়েছেন। গুরুতর আহত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বন্দুকধারীরা দুই পুলিশকে হত্যার পর চীনা কনস্যুলেট ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে স্থানীয় একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে জিও টিভি।
×