
ছবিঃ সংগৃহীত
অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্সের দুটি স্কুলে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সংঘটিত নৃশংস হামলায় ইউরোপজুড়ে তৈরি হয়েছে চরম আতঙ্ক ও শোক। দুই দেশেই এই হামলা থেকে উঠে এসেছে গুরুতর সামাজিক সংকেত, কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য, অস্ত্র আইন ও সহিংসতার প্রবণতা নিয়ে নতুন করে ভাবার তাগিদ।
অস্ট্রিয়ার গ্রাৎসে রক্তাক্ত গুলিবর্ষণ: ১০ জন নিহত
মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে, অস্ট্রিয়ার গ্রাৎস শহরের ড্রেইয়ারশুটসেনগাসে হাইস্কুলে ঢুকে ২১ বছর বয়সি সাবেক ছাত্র আর্থার এ. গুলি চালিয়ে ৯ জন ছাত্র এবং এক শিক্ষককে হত্যা করে। সে পরে নিজেই আত্মহত্যা করে।
আর্থার এ. আগে থেকেই অস্ত্রের লাইসেন্সধারী ছিলেন, গ্লক ১৯ হ্যান্ডগান এবং একটি সন-অফ শটগান দিয়ে সে হামলা চালায়। জানা গেছে, সে একাকী জীবন যাপন করত এবং ভার্চুয়াল গেমিং জগতে মগ্ন ছিল।
অস্ট্রিয়ায় এই প্রথম এত বড় আকারের স্কুল শুটিং ঘটলো, যা প্রশ্ন তুলেছে অস্ত্র আইন, মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা মোকাবেলায় রাষ্ট্রের ব্যর্থতা নিয়ে।
ফ্রান্সের নোজঁতে স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্টকে ছুরিকাঘাতে হত্যা: ঘাতক ১৪ বছর বয়সি কিশোর
সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে, ফ্রান্সের নোজঁ শহরের একটি মিডল স্কুলে ব্যাগ তল্লাশির সময় এক কিশোর (নাম: কোয়েন্টিন) ২০ সেন্টিমিটার লম্বা কিচেন ছুরি বের করে ৩১ বছর বয়সি স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্ট মেলানি জি-কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। মেলানি ছিলেন এক সন্তানের মা।
পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে কিশোর জানায়, শুক্রবার এক স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্ট তাকে তার প্রেমিকাকে চুমু খাওয়ায় বকাঝকা করেছিল, এ কারণে প্রতিশোধ নিতে সে হামলা চালায়।
ফ্রান্সে মানসিক স্বাস্থ্য, অস্ট্রিয়ায় অস্ত্র আইন নিয়ে উদ্বেগ
ফ্রান্সের প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, কোয়েন্টিন একটি সুস্থ পরিবার থেকে এসেছে, আগের কোনো অপরাধ বা মানসিক অসুস্থতার ইতিহাস নেই। তবে তার মধ্যে "মৃত্যুর প্রতি আকর্ষণ" ও "সহিংস গেমের আসক্তি" লক্ষ্য করা গেছে।
অন্যদিকে, অস্ট্রিয়ান প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্সান্ডার ভ্যান ডার বেলেন জানিয়েছেন, গুলি ও অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নিয়ে সরকার ভাবছে। গ্রাৎসের মেয়র বলেছেন, সাধারণ মানুষের অস্ত্রধারিতা নিষিদ্ধ করা উচিত।
স্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক, সমাধানের খোঁজে দুই দেশ
ফ্রান্সে অস্ত্র শনাক্ত করতে স্কুলে বিমানবন্দরের মতো মেটাল ডিটেক্টর স্থাপনের প্রস্তাব এসেছে, যদিও শিক্ষকরা এতে আপত্তি করছেন। অন্যদিকে, অস্ট্রিয়ায় উঠেছে দাবি—অস্ত্র লাইসেন্স পাওয়ার মানসিক পরীক্ষা যেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে শেয়ার করা যায়।
সূত্রঃ বিবিসি
নোভা