ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইরানি হামলার ভয়ে ইসরাইলের লেজেগোবরে অবস্থা!

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ৯ এপ্রিল ২০২৪; আপডেট: ১৪:৪২, ৯ এপ্রিল ২০২৪

ইরানি হামলার ভয়ে ইসরাইলের লেজেগোবরে অবস্থা!

ইরানি হামলার ভয়ে দূতাবাস খালি করছে ইসরাইল।

হঠাৎ করেই মহাবিপদে ইসরাইল। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালিয়ে বিপ্লবী গার্ডের জেনারেলসহ উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করার রীতিমত দৌড়ের উপর আছে তেল আবিব। এতোটা সঙ্গীন অবস্থায় কেউ কখনও ইসরাইলকে দেখেনি। চারিদিক থেকে সরে পড়ছে নব পরীক্ষিত বন্ধুরা। চতুর্মুখী চাপে রাতে ঘুমানে পারছেন না ইহুদি নেতারা। 

এক ইরানের প্রতিশোধ হুমকিতেই ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু’র। সব কুকর্মের সাথী আমেরিকাও ক্ষেপেছে তার ওপর। শুধু আমেরিকাই নয়, কড়া অবস্থান নিচ্ছে ইউরোপিয়ান দোসররাও। নিচ্ছে তেল আবিবের জন্য অস্বস্তিকর সব সিদ্ধান্ত। শুধু বাইরেই নয়, নিজে দেশের ভেতরেও দারুণ চাপে আছেন মধ্যপ্রচ্যের কসাই হিসাব খ্যাত নেতানিয়াহু। 

হামাস নিধনের কথা বলে গাজা উপত্যকায় গেলো ছয় মাস ধরে শুধু হত্যা আর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ছাড়া আর কিছুই অর্ঝন করতে পারেনি ইসরাইল। দেশটির লেলিয়ে দেয়া হায়েনাদের হাতে নিরীহ ফিলিস্তিনি হত্যা আর ধর্ষণ ছাড়া কোন অর্জনই নেই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির। হত্যা নেশায় দেশটির এতোটাই উম্মাদ হয়ে উঠে, যে তারা গাজায় ত্রাণবিতরণে নিয়োজিত থাকা বিদেশি কর্মীদেরও হত্যা করতে ছাড়ছে না। 

আর এখানেই বেঁধেছে যত বিপত্তি। গেল সপ্তাহে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মারা যায় ‘ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন’ নামক এনজিওর সাত কর্মী। অস্ট্রেলিয়ান, ব্রিটিশ, ফিলিস্তিনি, পোলিশ এবং মার্কিন-কানাডিয়ান সাত জন এই হামলায় নিহত হলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। জো বাইডেন, ঋষি সুনাক থেকে শুরু করে পোলিশ সরকারও ইসরাইলকে কড়া ভাষায় কৈফিয়ত চেয়েছে, বলেছে ইসরাইল নিয়ে নতুন নীতি নেবে তারা। 

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে ইসরাইল ইস্যুতে তার অবস্থান পাল্টাবে। আর ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার চাপে আছে যুক্তরাজ্য। এছাড়া বাকি দেশগুলোও ইসরাইলের কাছে ওই হামলার জবাব চেয়েছে। নেতানিয়াহু দুঃখ প্রকাশ করলেও বলেছেন, যুদ্ধের সময় এটা হয়েই থাকে। এতে আরও ক্ষেপেছে দেশগুলো। দেশটির ওপর চাপ বাড়ছে তাদের যুদ্ধনীতিতে পরিবর্তন আনার, কিন্তু আদৌ কি সেটা করবে ইসরাইল। 

এদিকে, ইরানকে নিয়ে মহা টেনশনে আছে ইসরাইল। যে কোন সময় হামলার হুমকিকে দেশটিতে রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে মানুষের। নেতানিয়াহু বুঝতে পারছে না, কি করে সামাল দেবেন পরিস্থিতি। সেনাবাহিনীর সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া জিপিএস সেবা। নাগরিকদের মাঝে বিলানো হচ্ছে তাবু। বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন না লোকজন। সুপারশপের তাকগুলো দ্রুত খালি হয়ে পড়ছে। 

এখানেই শেষ নয়, ইসরাইলের বিভিন্ন গণমাধ্যম রিপোর্ট করেছে যে, ইরানের হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলের বিভিন্ন দূতাবাসকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে অথবা খালি করা হয়েছে। আবার, গাজায় বর্বর অভিযানের ছয় মাস পূর্তির দিন দক্ষিণ গাজা থেকে প্রায় সব সেনা সরিয়ে নিয়েছে দেশটি। সেই সঙ্গে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহর বয়ে এবার লেবানন সীমান্তে সেনা সমাবেশ ঘটাচ্ছে ইসরাইল। 

এক কথায় নানাবিধ চাপে বড়ই বেকায়দা আছে দেশটি। এমন অবস্থার মধ্যেই ইসরাইলের সামরিক ব্যারাক ও ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইরাকের প্রতিরোধ আন্দোলনের যোদ্ধারা। সশস্ত্র এ গোষ্ঠিও ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। তারা জানিয়েছে, ইরানি নেতা খামেনি নির্দেশ দেয়া মাত্রই তারা ইসরাইলে পূর্ণাঙ্গ হামলা চালাবে। তিন দিক থেকে হামলা হলে, ইসরাইল কোন দিক সামলাবে, সেটাই বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। 

এম হাসান

×