ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাইয়ে দুইশ’ বছরের পুরোনো ইছামতির মেলা

 নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম 

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

মীরসরাইয়ে দুইশ’ বছরের পুরোনো ইছামতির মেলা

ঐতিহ্যবাহী ইছামতি মেলা

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে ২শ’ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২০ এপ্রিল) এই গ্রামীণ বৈশাখী মেলা উপলক্ষে হাজার হাজার দর্শনাথীর সমাগমে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা মাসের ৬ বৈশাখ প্রতিবছর মেলাকে ঘিরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শতাধিক দোকানী বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে আসেন। 

গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ক্রেতাদের মন আকৃষ্ট করতে মৃৎ শিল্পীরা মাটির বিভিন্ন খেলনা, হস্তশিল্পীরা বাঁশ, বেত, কাঠ, লোহা, শঙ্খের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন মেলায়। মেলায় উঠেছে বিভিন্ন খেলনা, খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের দোকানও।

জানা গেছে,  দুইশ’ বছরের পুরোনো সনাতন ধর্মালম্বীদের ইছামতি দেবীর মন্দিরে প্রতি বছর পূজা ও উৎসব হয়। এই উৎসবকে ঘিরে মন্দির সংলগ্ন জমিতে মেলা বসে। পর্যায়ক্রমে এই মেলায় সকল ধর্মালম্বীদের উপস্থিতিতে সর্বজনীনতা লাভ করেছে। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের মধুর শব্দে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে এক উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। প্রায় সব ধর্মের লোকের সমাগম ঘটে মেলায়। সারা দিন চলে পূজা অর্চনা। মেলায় দেশ বিদেশের হাজার হাজার দর্শনাথী ছুটে আসে। অনেকে মানত করে মন্দিরের পাশে অবস্থিত বট গাছের গায়ে সূতো জড়িয়ে দেয়। মেলা উপলক্ষে মন্দির ও মেলা কমিটি সাজসজ্জ্বা থেকে শুরু করে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মেলার পরদিন চতুষ্প্রহর ব্যাপী নামসংকীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান মেলা কমিটির তত্ত্বাধায়ক কালু কুমার দে।

মেলায় কুমিল্লার পদুয়া থেকে আসা মৃৎশিল্পী পরিমল চন্দ্র পাল বলেন, ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় আমি প্রতি বছর বিভিন্ন মাটির তৈরি জিনিস নিয়ে আসি। বিকিকিনি শেষে ভালোই লাভ হয়।

মেলায় ঘুরতে আসা গৃহবধূ নীলাম্বরী মজুমদার ও গৃহবধূ রুমা দে জানান, বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। বর্ষবরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা। প্রতিবছর বৈশাখে ইছামতির মেলা বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।

মেলা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক কালু কুমার দে বলেন, আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতার একটি অংশ বৈশাখ। বৈশাখে অনুষ্ঠিত ইছামতির মেলাও সেই ঐতিহ্যর অংশ। যেখানে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকলের উপস্থিতি জানান দেয় আমরা বাঙালি।

ইছামতি মেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সুমন দত্ত ও সদস্য মিন্টু কুমার পাল বলেন, দুইশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় বলী খেলা, পালাগান ও আসরগান হলেও বর্তমানে হয় না। তবে বাঙালির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে আগামীতে আরো সুপরিসরে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
 

এসআর

×