ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

এ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের সন্দেহজনক দরবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৯ নভেম্বর ২০২০

এ্যাসোসিয়েট অক্সিজেনের সন্দেহজনক দরবৃদ্ধি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতের কোম্পানি এ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন লিমিটেডের শেয়ার দর দিন দিন বাড়ছেই। কোথায় গিয়ে থামবে এই কোম্পানির দর এটি নিয়েই এখন সর্বত্র আলোচনা চলছে। গত ১৩ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৪০ টাকা ২০ পয়সা। কারসাজির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বাড়ানো হচ্ছে বলে ধারণা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। বাজার বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লেনদেন শুরুর পর দিন থেকেই কোম্পানিটির কোটির ওপর শেয়ারের ক্রয়াদেশ দেয়া থাকত। কারসাজির উদ্দেশ ছাড়া এক কোটির ওপর শেয়ারের ক্রয়াদেশ দেয়া থাকে না। শুধু তাই নয়, ৩৯ টাকার ওপর দর না পৌঁছা পর্যন্ত কোম্পানিটির ১ লাখের ওপর লেনদেনই হতো না। প্রথমবারের মতো ৩৯ দশমিক ৭০ টাকায় কোম্পানিটির ৫৭ লাখের ওপর শেয়ার লেনদেন হয়। পরের দিন সার্কিট ব্রেকার না থাকার সুযোগ কাজে লাগায় একটি চক্র। দাম বাড়া-কমার কোন সীমা না থাকায় একদিনে কোম্পানিটির দর ২৮ শতাংশের ওপর বাড়ানো হয়। রবিবার কোম্পানিটির সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বাড়ে। তাই এভাবে ক্রমাগত দর বাড়ার পেছনে কারও না কারও হাত রয়েছে। কিন্তু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। খুব দ্রুত এই কোম্পানির দরবৃদ্ধি নজরে না আনলে আরেকটি শাহজিবাজার কেলেঙ্কারি হতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, গত মাস অর্থাৎ অক্টোবরের ২৫ তারিখ থেকে কোম্পানিটি ডিএসইতে লেনদেন শুরু করে। লেনদেন শুরুর দিন কোম্পানিটির দর ছিল ১৫ টাকা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দিনশেষে কোম্পানিটি সর্বশেষ ৫৫ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়। এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এক শ্রেণীর অসাধু সিন্ডিকেট কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির দর বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করেন তারা। এ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন লিমিটেডের ইস্যু ম্যানেজার বিডি ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল হোল্ডিংস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বড়ুন পাল বলেন, শেয়ার দর বাড়ার বিষয়টি আমরা বলতে পারি না। এটা নিয়ে মন্তব্য করাও আমাদের কাজ না। তবে নতুন শেয়ার হিসেবে বাজারে এর চাহিদা বেশি। তাছাড়া গত বুধবার কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর প্রভাবও কিছুটা থাকতে পারে। তবে দাম বাড়ার কারণ ভাল জানে জনগণ বা ক্রেতা-বিক্রেতারা। এদিকে, গত বুধবার কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ২ শতাংশ নগদ এবং ৮ শতাংশ বোনাস। সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ২৫ পয়সা।
×