ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বছর শেষে ডলারের দাম দাঁড়াবে সাড়ে ৭২ রুপী

ভারতীয় রুপীর দরপতনে নতুন রেকর্ড

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২৯ আগস্ট ২০১৯

ভারতীয় রুপীর দরপতনে নতুন রেকর্ড

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের অর্থনীতি ভাল নেই; মন্দা ভাব ফুটে উঠছে অনেক কিছুতেই। যদিও দেশটির সরকার তা স্বীকার করছে না। বড় বড় বেসরকারী সংস্থায় কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক পড়েছে। যার ফলে বেকারত্বের হার বেড়েই চলেছে। এতে মানুষের ক্রয়ক্ষমাতও হ্রাস পাচ্ছে। আর এসবের সরাসরি প্রভাব পড়ছে মুদ্রার দরে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপীর দরপতন নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। আর এই পতন অব্যাহত আছে। সেই তুলনায় এশিয়ার বাজারে বাংলাদেশী মুদ্রা ভারতের তুলনায় ভাল অবস্থানে রয়েছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) ঢাকায় ভারতীয় মুদ্রার সঙ্গে বাংলাদেশী টাকার মূল্যের পার্থক্য ছিল মাত্র ১৪ পয়সা। বাংলাদেশের ১০০ টাকা দিলেই বদলে মিলছে ভারতের ৮৬ রুপী। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এটিই সর্বনিম্ন। ৭১-এ বাংলাদেশী টাকা এবং রুপীর দর প্রায় সমান ছিল। তারপর দিন দিন পড়তে থাকে বাংলাদেশী টাকার দাম। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দেশটির মুদ্রার দামের অবনতি শুরু হয় গত আগস্ট থেকে। সোমবার দিনের শুরুতেই ডলারপ্রতি ভারতীয় রুপীর দাম ৪২ পয়সা কমে দাঁড়ায় ৭২.০৮। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই নিম্নমুখী প্রবণতাও বজায় থাকে। এদিকে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের কারবার শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই টাকার দামে পতন ঘটে। ৫৯ পয়সা কমে গিয়ে এক সময় ১ ডলারের দাম হয় ৭২.২৫ টাকা। জানা গেছে, দরপতনের কারণে অনেকেই টাকা দিয়ে রুপী কিনে রাখছে। পর্যটনসহ বিভিন্ন কারণে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশীরাও বাড়তি সুবিধা ভোগ অন্যদিকে বাংলাদেশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ছে রুপী। এই আগস্টে রুপীর দাম এখনও পর্যন্ত পড়েছে গড়ে ২.৩ শতাংশ। যা গত ৬ বছরে একটি নজির। বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, গত অক্টোবরে রুপীর মূল্যের যে হাল হয়েছিল, এইভাবে চললে বছরের শেষে রুপী প্রায় সেই জায়গাতেই পৌঁছে যাবে। এক মার্কিন ডলার কিনতে তখন সাড়ে ৭২ রুপী খরচ করতে হবে বলে পূর্বাভাস সিঙ্গাপুরের সমীক্ষক সংস্থা ‘নোমুরা হোল্ডিংসে’র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুপীর দামের অবনমনের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ থেকে শ্লথতর হয়ে পড়া। তাদের ধারণা, গত চারটি ত্রৈমাসিকের মতো সদ্যশেষ হওয়া ত্রৈমাসিকেও ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির গতি শ্লথ হবে। তার আভাস ইতোমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে অটোমোবাইল শিল্প থেকে শুরু করে বস্ত্রশিল্পে। মানুষের হাতে রুপী নেই, চাকরির অনিশ্চয়তা চরমে পৌঁছেছে বলে মানুষ সুযোগ পেয়েও পণ্যাদি কেনার উৎসাহ পাচ্ছেন না। ফলে, বিক্রি হচ্ছে না গাড়ি। গাড়ি শিল্পের করুণ অবস্থা। শুধু তাই নয়, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির এই হাল দেখে বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও একটু একটু করে হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন। দেশের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা গত জুলাই পর্যন্ত ৩৮০ কোটি ডলার অর্থ তুলে নিয়েছেন। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২৭ হাজার ২৪৪ কোটি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, চীনা মুদ্রা ইউয়ানের তেজি হয়ে ওঠাও টাকার দাম পড়ার অন্যতম কারণ।
×