ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের সামনে ৪ চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের সামনে ৪ চ্যালেঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় টিকে থাকতে হলে সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের ভবিষ্যত ভূমিকা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে মোটা দাগে চারটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তির পরিসর বাড়ানো, স্থিতিশীল সুশাসন এবং জলবায়ু পরিবর্তনরোধ ও অভিযোজন। বুধবার ‘ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ ইন মিডল ইনকাম কান্ট্রিস’ শীর্ষক সেমিনারে এসব চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঋণ সহায়তার পরিবর্তে অংশীদারিত্ব, বেসরকারী খাতের বিপুল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে উন্নয়ন বিনিময়, বাণিজ্য-বিনিয়োগ এবং কূটনীতির মধ্যে সমন্বয় সাধনসহ বেশ কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ভবনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব অটোয়ার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজ স্কুলের সিনিয়র ফেলো সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. কেএস মুরশিদ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০১৪ সালে নি¤œ মধ্য আয়ের দেশের তালিকায় প্রবেশ করেছে অথচ দেশটি একইসঙ্গে এখনও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকাতেও রয়ে গেছে। এই বৈপরিত্ব কাম্য নয়। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে আরও উপরের দিকে যেতে হলে উন্নয়ন কৌশল ও নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশের বিদ্যমান উন্নয়ন কৌশল দিয়ে সেটি অর্জন করা যাবে না। প্রবন্ধে সাজ্জাদুর রহমান বাংলাদেশের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে চারটি বিষয়ের কথা বলেছেন। এগুলোর মধ্যে প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ঘন প্রবৃদ্ধি, ভ্যালু চেইন উন্নত করা, উন্নত অবকাঠামো তৈরি করা; বিশেষ করে জ¦ালানি খাতে, বেসরকারী খাতের উন্নয়নের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং বিশ^ অর্থনীতির সঙ্গে একীভূত হওয়ার ওপর জোর দেয়ার কথা বলেছেন। টেকসই উন্নয়নের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতকে শক্তিশালী করার জন্য এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। সাজ্জাদুর রহমান স্থিতিশীল সুশাসনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এজন্য জবাবদিহি ও দরিদ্রবান্ধব সরকার, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং রাজস্ব নীতির সংস্কার করা প্রয়োজন। প্রবন্ধে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এখন আর বিদেশী সাহায্য নির্ভর দেশ নয়। পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের বিদেশী সহায়তা গ্রহণের পরিমাণ কম, যা প্রায় অর্ধেক। দেশের রেমিটেন্সের পরিমাণ এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে ২০১৫ সালের বাংলাদেশে নীট বিদেশী সহায়তার পরিমাণ ২ দশমিক ৫৭০ বিলিয়ন ডলার। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতা এখনও বিদ্যমান। মধ্যম আয়ের স্তরে পৌঁছলেও দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মসূচীর মৌলিক মানবাধিকার পূরণের পর্যায়ে রয়ে গেছে।
×