ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিগারেটের কর কমানোর পদক্ষেপে হতাশ তামাক বিরোধীরা

প্রকাশিত: ০২:৩২, ২৪ মে ২০১৭

সিগারেটের কর কমানোর পদক্ষেপে হতাশ তামাক বিরোধীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আসন্ন বাজটে সিগারেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে হতাশা তামাক বিরোধ সংগঠনগুলো। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেট ও ধোঁয়াবিহীন (গুল, জর্দা) তামাকে কর (সম্পূরক শুল্ক) না বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। এ প্রস্তাব চরম জনস্বাস্থ্য বিরোধী। সরকারি তথ্যমতে গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে জনগণের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ অবস্থায় তামাকপণ্যের মূল্য অপরিবর্তিত রাখার অর্থ ভোক্তার কাছে এগুলো আরো সহজলভ্য হয়ে যাবে। অধিকন্তু ভ্যাটের হার কমিয়ে ১২-১৩ শতাংশ করা হলে এসব তামাকপণ্য আরও বেশি সস্তা হয়ে পড়বে। একইসাথে প্রস্তাবনায় সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে মূল্যস্তরের সংখ্যা কমিয়ে জটিলতা কমানোর পরিবর্তে কার্যত আরো একটি মূল্যস্তর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। সিগারেটের সর্বনিম্নস্তর ভেঙ্গে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সিগারেট এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সিগারেট নামে দুটি নতুন স্তর সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া করারোপের পুরানো ও জটিল এডভ্যালোরেম পদ্ধতিও বহাল রাখা হয়েছে। তামাকবিরোধীদের সুনির্দিষ্ট কর পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি সহজ এবং কার্যকর তামাক কর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০১৬ সালে যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন তারও বিন্দুমাত্র প্রতিফলন নেই এই প্রস্তাবনায়। জানা গেছে, জর্দা ও গুলের করহার একই রাখা হয়েছে। অথচ দেশের মোট তামাক ব্যবহারকারীর ৫০ শতাংশই ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহার করেন, যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী এবং দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে রক্ষার কোনো প্রয়াস এনবিআর এর বাজেট প্রস্তাবনায় নেই। অন্যদিকে, নি¤œস্তরের সিগারেট এবং বিড়ির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হলেও সম্পূরক শুল্ক মাত্র ২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এডভ্যালোরেম পদ্ধতি বহাল থাকায় এই দুটি পণ্যের মূল্য যতটুকু বাড়বে তার সিংহভাগই যাবে তামাক কোম্পানিগুলোর পকেটে। সর্বোপরি, প্রস্তাবিত তামাক কর সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য লাভজনক হবেনা। এভাবে তামাক কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ যেমন সম্ভব নয়, তেমনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণাও ব্যর্থ হওয়ার আশংকা রয়েছে তামাকবিরোধীদের মনে।
×