অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছি ইউনিয়নের ১০ থেকে ১২টি গ্রাম মূলত ফুলের জন্যই পরিচিত। রাজধানীর শাহবাগের ফুল মার্কেটের একটি বিরাট চাহিদা পূরণ করছে এই গ্রামের ফুল চাষীরা। তাই ফেব্রুয়ারি মাসকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
আর ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থাসহ ছোটখাটো কিছু সমস্যার সমাধান হলে এখানকার ফুল বিদেশেও রফতানি করা যাবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা। এ যেন ধরিত্রীর বুকে এক টুকরো স্বর্গোদ্যান। যতদূর চোখ যায় সারি সারি লাল, হলুদ, কমলা, সাদা রঙের গ্যালাডিয়া, গাদা, চেরি, জিপসি ও ডালিয়াসহ নানা রঙের ফুল দেখে যে কারওই মন ভরে যাবে। নারায়ণগঞ্জের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড় বন্দরের সাবদী, শেলসারদী, মাধবপাশা, দিঘলদিসহ আশপাশের ১০ থেকে ১২টি গ্রামে রয়েছে এ ফুলের সমারোহ। পহেলা ফাল্গুন, ভালবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো বিশেষ দিনে রাজধানীর শাহবাগ ফুল মার্কেটের সিংহভাগ চাহিদাই পূরণ করছে এখন এই গ্রামগুলোর ফুল। আর শস্যের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় ফুল চাষেই আগ্রহ এখানকার চাষীদের। তবে কোল্ড স্টোরেজ ও পর্যাপ্ত অর্থের যোগান না থাকায় বাজার ভাল থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ লাভবান হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
পুরুষদের পাশাপাশি এখানকার নারীদেরও কর্মসংস্থান মিলেছে এই ফুল চাষের মাধ্যমে। তাদের মতে, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই এলাকা হতে পারে দেশের প্রধান ফুল চাষের ক্ষেত্র।
এদিকে নিজেদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে দ্রুত সরকারী সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন বন্দর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা এমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখানে ফুল চাষের ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল। কিন্তু কোন উপকরণ বিনামূল্যে দেয়ার মতো ব্যবস্থা আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নাই। ভবিষ্যতে যদি কোন প্রকল্প পাওয়া যায় বা রাজস্ব অর্থায়নে যদি সম্ভব হয় তাহলে আমরা সেটা দেখব।’ নারায়ণগঞ্জ বন্দরের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় পাঁচ হাজার নারী-পুরুষ ফুল চাষের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন।