আজ সাংবাদিক সাহিত্যিক সন্তোষ গুপ্ত’র জন্মদিন। জেলখানায় চাকরি করেছেন, আবার জেলও খেটেছেন পঞ্চাশের দশকে। সাংবাদিকতার জগতে ছিলেন অনন্য ব্যক্তিত্ব। ক্ষুরধার লেখনী সামরিক জান্তা শাসনকালে মানুষকে উদ্দীপ্ত করত। বক্ষ্যমান কবিতাটি ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানকালে রচিত ও ১৯৭০ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি সংখ্যা দৈনিক সংবাদ-এ প্রকাশিত এবং অগ্রন্থিত। জন্মদিনে তাঁর কবিতা দিয়ে জানাই তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
অগ্রন্থিত কবিতা
স্মৃতি থেকে দূরে
সন্তোষ গুপ্ত
শিশুপাঠ হারিয়ে ফেলেছি;
অনেক বনেদী কথা এখন বিস্মরণের শিকার
শুভাষিতাবলী শুধু আত্মবিলাপের রীতি।
গোলাভরা ধান গোয়ালে গরু পুকুরে মাছ
সাঁঝের বেলার রূপকথাকেও হার মানানো।
এতে বিশ্বাস করেছিল কয়েকজন দুঃসাহসী
সেই তো কাল হলো তাদের।
আহত গর্বের মতো কোনো মুখ,
পাতার আড়ালে পাখিলুকানো হাসি কোন অধর,
তালীবনরাজির সমারোহ
-এসব আজও হানা দেয় স্বপ্নে,
পাঁজরের নিচে যেখানে হৃৎপি-টা এখনো সচল
হঠাৎ তাকে বেপরোয়া হতে বলে।
না-মানা দলের পড়োরা এলো
যন্ত্রণাকে জ্বালিয়ে মশালের মতো
মন্ত্রকে করে সমুজ্জ্বল।
কণ্ঠ তাদের উদ্দাম যেন সুরাপান করেছে
এসবই উচ্চ গ্রামে বাঁধা স্বর
সেই দরাজ কণ্ঠের হাঁক পৌঁছলো
চৌচির করে নিশুতি রাতের বুক
যেখানে জাল টেনে তোলে জেলেরা,
যেখানে নৌকার হাল ধরে থাকে নাবিক
গুঞ্জর মুখর বন্দরে গঞ্জে
অনেক অখ্যাত শ্রমার্ত পেশীতে।
কখন শিশুপাঠ হারিয়ে ফেলেছি
স্বর্গাদপী গরিয়সী বোঝা
জন্মভূমির মুখ চেয়ে
পুরুষাণুক্রমের দায় টেনে হয়রান
নুইয়ে পড়া শিরদাঁড়া
টান করে দিয়ে
একবার তোমরা
সূর্যের মুখোমুখি করে দিয়েছিলে
তোমাদের গুলি-বেঁধা বুকের মতো।
সেদিন রাজপথে রক্তপদ্ম ফুটেছিল
কারও অশ্রুহারা চোখে ছিল
চৈত্রের পলাশ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: