স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বলেন, পৃথিবীতে ডিজিলাইজেশন আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। পৃথিবীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আমাদের টিকে থাকতে হলে নিজেকে ও জাতিকে সেভাবে যোগ্য করে তুলতে হবে। বাংলাদেশকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দানের উপযোগী করে গড়ে তোলার সেই লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আন্তর্জাতিকমানের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (বিডিইউ) স্থাপন করেছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল বাংলাদেশকে টেকসই করা। বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০২১ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশকে টেকসই করে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীতে এ বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। তিনি বাঙ্গালীর চিন্তা ও প্রেরণার উৎস। বাঙ্গালীর যত সফলতা ও অর্জন তার মূলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য। তাঁর কর্ম ও আদর্শ চিরকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে।
তিনি রবিবার বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈরস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘‘বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম ” স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন এবং মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠাণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ডিজিলাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ অনেক দুর এগিয়ে গেছে। পৃথিবীর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যার পাঠ্যসূচি সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল কেন্দ্রিক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি ও শিক্ষার কাঠামো যেভাবে করা হয়েছে, পৃথিবীর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত তেমন শিক্ষার কাঠামো তৈরী করা হয় নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার কাঠামো এমনভাবে সম্প্রসারিত হতে যাচ্ছে, যা নিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশ ভাবতেও পারে নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বিশেষত্ব থাকবে।
এখানকার পাঠ্যসূচি, পাঠ্য কার্যক্রম ও এর পাঠ্য কৌশল পৃথিবীর অন্যান্য দেশ গ্রহণ করবে এবং তা সম্প্রসারিত হবে। সেই আদলেই এ বিশ্ববিদ্যালয়টি তৈরী হচ্ছে। ভাল জিনিস সবাই গ্রহণ করবে এটাই নিয়ম এভাবেই দুনিয়ার সভ্যতার বিকাশ ঘটে। আগামীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুকরণ ও অনুসরণ করে পৃথিবী লাভবান হবে, এখানকার কনসেপ্ট পৃথিবীতে সম্প্রসারিত হবে -ইনশায়াল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমরা ভালবাসি বা তার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল এটা শুধু মুখে বললেই হবেনা, সেগুলো কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। তাঁর আদর্শকে ধারণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর নামকে নয় তাঁর কর্ম ও চিন্তাধারাকে ভালবাসতে হবে। তিনি ছিলেন পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ শাসক ও রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। অথচ তাঁর সম্পর্কে রাজনৈতিক আলোচনা বেশী হলেও তাঁর এ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা তুলনা মূলক কম হয়। এখন সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর প্রশাসনিক কর্ম, রাষ্টপরিচালনাসহ তাঁর কর্মময় জীবন জাতির সামনে তুলে ধরার। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে সাড়ে তিন বছরে কিভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন, কিভাবে দেশ পরিচালনা করেছিলেন, কিভাবে প্রশাসনকে গড়ে তুলছিলেন, কিভাবে স্বাস্থ্য নীতি, শিল্প নীতি, শিক্ষানীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছিলেন- সেইসব বিষয় নিয়ে কাজ করার।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে যখন বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন আমরা অনেকেই বিষয়টি বুঝতে পারিনি, বিষয়টি নিয়ে অনেকে হাসাহাসি করেছে। দলের জন্য না বুঝেই আমরা এ ঘোষণাকে ভাল বলেছি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষপট সম্পূর্ণ ভিন্ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়েছে। এজন্য দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলায় আইসিটি পার্ক গড়ে তোলা হবে। গাজীপুরের পার্ক হবে দেশের আইসিটি’র রাজধানী।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড . মুনাজ আহমেদ নূও এর সভাপতিত্বে অন্যান্যেও মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ প্রমূখ।