ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ধান কাটা ও মাড়াই চলছে পুরোদমে

গাইবান্ধায় আমনের খেতে চাষিদের ধান কাটার ধুম লেগেছে

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২৬ নভেম্বর ২০২১

গাইবান্ধায় আমনের খেতে চাষিদের ধান কাটার ধুম লেগেছে

সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধার সাত উপজেলায় আমন ধান কাটার ধুম লেগেছে। আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই চলছে পুরোদমে। মাঠের সোনালি ধান এখন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, এ মৌসুমে ভাল ফলন পেয়ে তারা খুশি। কিন্তু কিছুটা বেড়েছে উৎপাদন ব্যয়। বিঘা প্রতি অতিরিক্ত খরচ গুনতে হয়েছে তাদের। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়েও কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি বছর আমন চাষে বড় কোন প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হয়নি জেলার কৃষকদের। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নির্বিঘেœ ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন কৃষান-কৃষানিরা।সরেজমিন দেখা যায়, কৃষক ধান কেটে আঁটি বেঁধে কেউ মাথায় করে, আবার কেউ পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির উঠানে চলছে ধানমাড়াইয়ের কাজ। এসব ধান নিয়ে কৃষকের যেমন ব্যস্ততা, তেমনি আনন্দও লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকের বাড়িতে চলছে শীতের সকালে ভাপা, পুলি, তেল পিঠা, নতুন চালের পায়েস, নাড়– ও মুড়ি তৈরির কাজ। ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের কৃষক আয়নাল মিয়া বলেন, ধানের বা¤পার ফলন হয়েছে। অগ্রহায়ণ মাসে পুরো ধান কাটা শুরু হলেও আগাম জাতের বিভিন্ন ধান কার্তিকের মাঝামাঝি সময়ে কাটা শুরু হয়েছে। তবে বীজ ও চারা উৎপাদন, হাল চাষ, চারা রোপন, আইল প্রস্তুতকরণ, নিড়ানী দেয়া, জৈব ও রাসায়নিক সার, বালাই দমন, সেচ, কাটা ও মাড়াই মিলিয়ে এবার আমনে বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ বেড়েছে দেড় থেকে দু’হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৫ মন ধান উৎপাদনে খরচ পড়ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। কৃষিবিদ সাদেকুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমনে প্রতি বিঘায় উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় ইজারাভিত্তিক চাষিদের ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা রয়েছে। উৎপাদন ব্যয়ের সাথে বাজার দরের সামঞ্জস্য না থাকলে পাইকার-ফড়িয়াদের খপ্পরে পড়ে তাঁরা পুঁজি হারাতে পারেন।গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন জানান, এ বছর জেলার সাত উপজেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এরমধ্যে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমির ফসল কর্তন করা হয়েছে। এবার হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৪.৩৮ মে.টন। জেলাজুড়ে রোপা আমনের সম্ভাব্য ফলন ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৮ মে.টন। বর্তমান বাজার দরে কৃষকের লোকশান হবার কোন সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
×