ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনের ৭ম দিনেও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রীদের ভিড়

প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ২৯ জুলাই ২০২১

লকডাউনের ৭ম দিনেও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রীদের ভিড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ লকডাউনের ৭ম দিনেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে আসা যাত্রীদের চাপও রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় থ্রি-হুইলার এবং মোটরসাইকেলে চেপে সাধারণ যাত্রী ঘাটে আসছেন। এরপর ফেরিতে উঠতে আর বাঁধা থাকছে না। যাত্রী ভাড়া ২৫ টাকা দিয়ে অনায়াসেই ফেরিতে উঠছেন যাত্রীরা। কোনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মানুষের যাতায়াত। সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নানা অজুহাতে পদ্মা পারাপার হচ্ছে উভয়মুখী যাত্রীরা। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে শত শত কিমি দূর হয়ে নির্ধারিত ভাড়ার ৪/৫ গুণ ভাড়া দিয়ে বিভিন্ন হালকা যানবাহনে ঢাকামুখী মানুষ বাংলাবাজার ঘাটে এসে নামছে। ছোট ছোট যান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে বাংলাবাজার ঘাটের ২/৩ কিমি দূরে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। যাত্রীরা পায়ে হেঁটে ঘাটে আসছে শিশু-নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন ধরণের শ্রমজীবীসহ নানা পেশার মানুষ। দুপুরের দিকে বৈরি আবহাওয়ায় পদ্মা উত্তাল হয়ে উঠেছে। তবুও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থবিধি উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। এদিকে বাংলাবাজার ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় ৫শতাধিক পন্যবাহী ট্রাক আটকে আছে। বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণ যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় সরকার। কঠোর লকডাউন থাকা সত্তেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা রাজধানী গামী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেশি দেখা গেছে। বর্তমানে এ নৌপথে চারটি রো রো ও তিনটি কে-টাইপ ফেরি চলাচল করছে। এ ফেরিগুলোতে যানবাহনের পাশাপাশি টিকিট কেটে সাধারণ যাত্রীদের পারাপার করা হচ্ছে। ঘাটের টার্মিনালেও ৫ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। ঘাটের চারটি পন্টুনে পদ্মা পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা। এসব যাত্রী মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, মাহিন্দ্র বা অটোরিকশায় ঘাটে আসছেন কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই। ফেরিতে যাত্রী পারাপার বন্ধের ঘোষণা থাকলেও সাধারণ মানুষ নানা অজুহাত দেখিয়ে ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। কেউ বলছে অসুস্থ, কেউ বলছে রোগী দেখতে যাবে, কেউবা বলছেন চাকরি বাঁচাতে হলে ঢাকায় যেতে হবে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা মানছে না তারা। অবস্থার দৃষ্টে মনে হয় মানুষ ভুলে গেছে যে, দেশে করোনা মহামারী চলছে। দিন দিন তা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। খুলনা থেকে আসা যাত্রী মীর ইমরান বলেন, ‘একদিকে কঠোর লকডাউন অপর দিকে ছোট ছোট পরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন সবই চলাচল করছে। এটা কেমন লকডাউন? বেশি ভাড়া দিয়ে ঘাট পর্যন্ত আসলাম লঞ্চ বন্ধ এখন ফেরিতেই গাদাগাদি করে পদ্মা পার হতে হবে।’ বরিশাল থেকে আসা যাত্রী বজলুর রহমান বলেন, ‘আমি জরুরী কাজেই তো ঢাকা যাচ্ছি। আমার ছোট ভাই গুরুতর অসুস্থ তাই ঢাকা যেতে হচ্ছে। দ্বিগুন-তিনগুন ভাড়া দিয়ে ঘাটে এসেছি। লকডাউনই যদি হবে তাহলে ঘাটে এত ব্যক্তিগত গাড়ি কিভাবে আসলো?’ বাংলাবাজার নৌপুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যাত্রীরা বেশির ভাগই ঢাকামুখী। ঢাকা থেকে কম আসছেন। ফেরিঘাটে আসা মানুষ ঠেকানো যাবে না। কারণ ঘাটে মোবাইল কোর্ট নাই, পুলিশের জনবল কম। কোন ভাবেই সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’ বাংলাবাজার ঘাট ম্যানেজার মো: সালাউদ্দিন মিয়া জানান, ‘জরুরী পরিবহন পারাপারের জন্য ৬ টি ফেরি চালু রাখা হয়েছে। ফেরি ঘাটে ভিড়লেই ঘাটে অপেক্ষমান যাত্রীরা লাফিয়ে লাফিয়ে ফেরিতে উঠে পড়ছে। যাত্রী চাপে পরিবহন পারাপারে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
×