ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর বাজারে এসেছে গোপালভোগ আজ

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ২০ মে ২০২১

রাজশাহীর বাজারে এসেছে গোপালভোগ আজ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর বাজারে এসেছে দিয়েছে সুমিষ্ট জাতের গোপালভোগ আম। জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে বাজারে দেখা মিলেছে গোপালভোগের। বাজারে গুটিজাতের আম কেনাবেচা ১৫ মে থেকে শুরু হলেও এবার উঠলো গোপালভোগ। আম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিবৃষ্টি ও গরমে গোপালভোগ আম সময়ের আগেই পেকে গেছে। প্রশাসনকে অবহিত করে গাছ থেকে আম নামিয়ে বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে। গোপালভোগ আম বাজারে আসায় বেচাকেনাও বেড়েছে বলে জানান আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, ভোক্তাদের কাছে পরিপক্ব ও ফরমালিনমুক্ত আম সরবরাহ নিশ্চিত করতে সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী ২০ মে থেকে গোপালভোগ আম পাড়তে পারবেন চাষিরা। এতে গুটি আমের পাশাপাশি বাজারে এখন শুরু হলো গোপালভোগ কেনাবেচা। এছাড়া আগামী ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ, লখনা ও রাণীপছন্দ আম পাড়া যাবে। অন্যদিকে হিমসাগর, ক্ষিরসাপাত জাতের আম আরও তিন দিন পর (২৮ মে) থেকে পাড়তে পারবেন। ল্যাংড়া নামানো যাবে ৬ জুন থেকে। ১৫ জুন থেকে নামবে আম্রপালি ও ফজলি আম। আর মৌসুমের শেষে ১০ জুলাই নামতে শুরু করবে আশ্বিনা ও বারি আম-৪। এ ছাড়া রঙ্গিন আম খ্যাত বারি আম-১৪ নামবে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের দিকে। রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং ভোক্তা পর্যায়ে বিপণনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পৃথক টিক কাজ করছে। জনসচেতনতা সৃষ্টি ছাড়াও বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেবেন তারা। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, এবার খরায় আমের গুটি ঝরে গেছে। এছাড়া এখন কালবৈশাখীর মৌসুম। কিছু পরিপক্ব আমও ঝরে গেছে। তবুও এবার আমের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, নানান কারণে এই মৌসুমে আমের উৎপাদন কম হয়েছে। এতে সরবরাহ কম থাকায় এবার আমের বাজার চড়েছে। আর একই কারণে এবছর সময়ের আগেই ফুরিয়ে যাবে রাজশাহীর আম। রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক পাশেই থাকা পুরনো কাচারি মাঠকে ঘিরে ধুলোবালি ও প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে এখন আমের হাট জমতে শুরু করেছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা আমবোঝাই ভ্যানগাড়ি ও নসিমনগুলোর জটলা। সবাই গাদাগাদি করে আমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এখনও বাইরের ব্যবসায়ীরা রাজশাহীতে আম কেনার জন্য রাজশাহী আসতে পারছেন না। তাই চলতি মৌসুমে ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে বলে মনে করছেন স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা। এরপরও প্লাস্টিকের ক্যারেটে করে থরে থরে সাজানো হচ্ছে রাজশাহীর গুটি ও বনেদিজাতের কাঁচা-পাকা আম। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আম পরিবহনকে কেন্দ্র করে নতুন এই ধরনের ব্যবসা গড়ে উঠেছে। বছর দশেক আগেও বাঁশের ঝুড়িতে করে আম পরিবহন করা হতো। কিন্তু এখন সেই বাঁশের ঝুড়ির জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিকের ঝুড়ি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাঁশের ঝুড়িতে অনেক সময় আম নষ্ট হয়ে যেত। প্লাস্টিকের ঝুড়িতে সেই আশঙ্কা নেই। তাছাড়া বাঁশের ঝুড়ি শুধু একবারই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু প্লাস্টিকের ঝুড়িগুলো দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা যায়। সব মিলিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় এই আমের হাট। বানেশ্বর হাটের আম ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, প্রথম দিকে হাটে গুটি, গোপালভোগ ও রানিপছন্দ এই তিন জাতের আম বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এবার রোজা, ঈদের ছুটি এবং লকডাউনের কারণে বেশিরভাগ চাষিই গাছ থেকে আম ভাঙ্গেননি।
×